নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার পথিকৃৎ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী জয়নুল উৎসব-২০২১। চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক আহমেদ উল্লাহ এবং শিল্পাচার্য-পুত্র খায়রুল আবেদিন। এর আগে শিল্পাচার্যের সমাধিতে ফুল দিয়ে শুরু হয় প্রথমদিনের অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, চারুকলা অনুষদ, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর দুই প্রখ্যাত শিল্পী ভারতের বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিব কুমার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুস শাকুর শাহকে জয়নুল সম্মাননা-২০২১ দেওয়া হয়। অধ্যাপক শিব কুমারের পক্ষে সম্মাননা দেন সঞ্জয় কুমার চক্রবর্তী। এরপর চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী জয়নুল মেলার উদ্বোধন করেন যৌথভাবে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে শুরু হয়ে মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। এছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় চারুকলা অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে জয়নুল স্মারক বক্তৃতা-২০২১ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এতে কামরুলের শিল্পাদর্শ: লোক ঐতিহ্যের প্রতি অনুরাগ ও আধুনিকতা শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাবি বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। আলোচনায় অংশ নেবেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং অধ্যাপক ঢালী আল মামুন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, চারুকলা শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য ১৯৪৮ সালে ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। এ আর্ট ইনস্টিটিউট বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ হিসেবে সুপরিচিত। তার অনবদ্য সৃষ্টি এ প্রতিষ্ঠানটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতীয় উপমহাদেশে চারুকলা শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। অনাগত ভবিষ্যতের প্রজন্মকেও নানাভাবে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে এ প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, জয়নুল আবেদিন ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষের মর্মস্পর্শী ও মানবিক চিত্র এঁকে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছিলেন, যা তাকে আন্তর্জাতিক পরিম-লে খ্যাতি এনে দিয়েছে। তার অনন্য অবদানের জন্যই বাংলাদেশের শিল্পচর্চা আজ ঈর্ষণীয় মানে পৌঁছেছে। অসাধারণ শিল্পকর্মের মাধ্যমে তিনি মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতিকে উজ্জীবিত করেন। শিল্পাচার্যের এসব কর্মপ্রয়াস শিল্পজগতে তাকে অমরত্ব এনে দিয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর বলেন, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শিল্পকর্মের উন্নতি সাধনে আমাদের শিল্পীরা অনন্য অবদান রেখে চলছে। শিল্পাচার্যের আদর্শ অনুসরণ করে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।
আরও পড়ুন
মনি কিশোরের মৃত্যু: গতকাল যা ঘটেছিল রামপুরার পপি ভবনে
৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা আয়োজনে জাতীয় কবিকে স্মরণ করছে জাতি
বিপন্ন ভাষাগুলোর সংরক্ষণ-গবেষণার লক্ষ্যে সংসদে নতুন বিল উত্থাপন