October 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 19th, 2023, 9:25 pm

চাষীদের অনাগ্রহে লোকসানে চলছে ম্যাংগো ট্রেন

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাষীরা ম্যাংগো ট্রেনে আম পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছে না। ফলে লোকসানে চলছে ম্যাংগো ট্রেন। মূলত শিডিউল বিপর্যয়সহ নানা ঝক্কি-ঝামেলার কারণেই চাষীরা ট্রেনে আম পাঠাতে আগ্রহী নয়। বরং বেশি খরচে ট্রাকে আম পাঠাতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ চতুর্থ মৌসুমের মতো এবারও ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে আম নিয়ে প্রতিদিন ছেড়ে যাচ্ছে এ ট্রেন। সড়কপথের যানবাহনের তুলনায় এ ট্রেনে কম খরচে আম পরিবহন করা যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও আম পরিবহনে এ ট্রেন ব্যবহারে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ নেই। আমচাষী, ব্যবসায়ী এবং রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রচার-প্রচারণার অভাব, নানা রকম ঝক্কি-ঝামেলা ও ট্রেনের শিডিউল বিপর্য়ের কারণে ম্যাংগো ট্রেন আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না। তাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৪ দিন ট্রেনটি চালাতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত তা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। মূলত চারঘাট-বাঘার আম নিয়েই রাজশাহী আমের জন্য বিখ্যাত। রাজশাহী জেলার ৯ উপজেলায় ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এর মধ্যে চারঘাট উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে বাগান রয়েছে। এ মৌসুমে ওই উপজেলার প্রায় রেকর্ড পরিমাণ ৮০-৮৫ শতাংশ গাছে আম এসেছে। এত বেশি পরিমাণ আম দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতে বেকায়দায় পড়েছে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। চাষি ও বাগান মালিকদের কথা বিবেচনা করেই গত তিন বছরের মতো এবারও ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সাড়া নেই।

সূত্র জানায়, শিডিউল সময়ে ট্রেন না আসায় প্রতিদিনই হাজার হাজার ক্যারেট আম ট্রাক লোড হয়ে সড়কপথে ঢাকায় যাচ্ছে। আড়তগুলোর সামনে ছোট-বড় ট্রাকের ভিড় লেগে আছে। সড়কপথের যানবাহনের তুলনায় ট্রেনে খরচ কম হলেও ঝক্কি-ঝামেলা ও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে ট্রেনে আম পাঠাতে কারবারিদের আগ্রহ নেই। চারঘাটের সরদহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে গত ৮ জুন ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে ১ হাজার ৭৩৫ কেজি আমের প্রথম চালান ঢাকায় যায়। সরদহ স্টেশন থেকে আমের বুকিং হয়েছে মঙ্গলবার ২ হাজার ৭০০ কেজি ও বুধবার ৩ হাজার ২২০ কেজি। এরপরই কমতে শুরু করে চালানের পরিমাণ। বৃহস্পতিবার ৯৩০ কেজি ও শুক্রবার ৮২০ কেজি আমের বুকিং হয়েছে। ম্যাংগো ট্রেনে প্রতি কেজি আম পরিবহনে খরচ হয় ১ টাকা ১৮ পয়সা। ট্রেনে আম ওঠানো ও নামানোতে দুই স্টেশনের কুলি খরচ প্রতি কেজিতে ১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা।

তাছাড়া বাগান থেকে সরদহ স্টেশন ও কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকার বাজারে নিয়ে যাওয়ার আলাদা গাড়ি ভাড়া রয়েছে। তাতে প্রতি কেজি আমে ৪-৫ টাকার বেশি খরচ পড়ছে। এরপর শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে রাতের মধ্যে সব আম স্টেশন থেকে আনলোড করতে না পারলে দিনে গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয় না। তখন আম নষ্ট হয়। তার চেয়ে ট্রাকে ৪-৫ টাকায় সহজে বাগান থেকে ঢাকায় আম পাঠানো যায়। এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটির মাধ্যমে রেলওয়ে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের বিশেষ সেবা দিচ্ছে। এ ট্রেনের মাধ্যমে লাভ কিংবা লোকসান মূল বিষয় না। যেন শিডিউল অনুযায়ী ট্রেন পৌঁছে সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।