এস এ শফি, সিলেট :
সিলেটের দলদলি চা বাগানের ১১ শিক্ষার্থীর পাশে দাড়িয়েছে সিলেট মহানগর জামায়াত।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাদ জুমআ স্থানীয় মন্দির প্রাঙ্গনে মহানগর জামায়াতের পক্ষ থেকে সিলেট নগরীর ৫নং ওয়ার্ডের দলদলি চা বাগানের এসএসসি উত্তীর্ণ ১১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি ফি, নতুন ড্রেস ও ব্যাগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করা হয়।এছাড়া জামায়াতের পক্ষ থেকে দলদলি চা বাগান দূর্গা মন্দির স্কুলের জন্য একটি সিলিং ফ্যান প্রদান করা হয়।
অর্থ সহায়তা প্রদান কালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ছিলো বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে। অথচ এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে দলদলি চা বাগানের ১১ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি হতে না পারা আমাদের জন্য দুঃখের ও উদ্বেগের। শিক্ষার্থীদের এই সংকটের বিষয়টি তুলে ধরার জন্য মিডিয়াকে ধন্যবাদ। যার কারণে আমরা তাদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। জামায়াতের পক্ষ থেকে ১১ শিক্ষার্থীর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। জামায়াত দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়েই একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চায়। আমরা আশ^স্ত করতে চাই আপনাদের সহযোগিতায় জামায়াত ক্ষমতায় গেলে অর্থের অভাবে কোন শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হবেনা।
তিনি বলেন, চা শ্রমিক পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। এই ধরণের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রণোদনা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু তাদের জন্য স্থায়ী কোনো নীতিমালা না থাকায় তারা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই এসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হয়ে উঠুক। যে কোন প্রয়োজনে জামায়াত তাদের পাশে থাকবে।
সিলেট মহানগরীর বিমানবন্দর থানা জামায়াতের আমীর শফিকুল আলম মফিকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী ফরিদ আহমদের পরিচালনায় নগদ অর্থ প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, সমাজসেবী ফয়জুল হক, ৫নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি আব্দুস সালাম, শাহী ঈদগাহ ইউনিট সভাপতি গোলাম মওলা, দলদলি চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মিন্টেন দাস, পুজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন কুর্মি, দলদলি যুবসংঘের সভাপতি মনোরঞ্জন দাস, পঞ্চায়েত কমিটির মিলন দাস, হরিচরণ দাস, শ্যামল কুণ্ডা, মদন দাস ও রাজেশ দাস প্রমূখ।
উল্লেখ্য- সিলেট নগরীর উপকণ্ঠে দলদলি চা-বাগানের ১১ জন চা-শ্রমিক পরিবারের সন্তান এ বছর এসএসসি পাশ করে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও ভর্তি ফি’র অভাবে তাদের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছিল। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছিল ভর্তির শেষ তারিখ। ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেউই ভর্তি ফি’র টাকা জোগাড় করতে পারেনি। তারা হলেন- সুস্মিতা দাস, সীমানা নায়েক, শ্রাবন্তী দাস, ঝর্ণা নায়েক, শ্রীমা মুন্ডা, অন্তরা দাস, অজিত রাম গঞ্জু, শিল্পীমনি গঞ্জু, শাওন কুর্মী, মনে তুলি দাস ও রিপন দাস। সহায়তার টাকা হাতে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সুস্মিতা দাসসহ অন্য শিক্ষার্থীরা। তারা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ, মদনমোহন কলেজ ও সৈয়দ হাতিম আলী কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। সমাজ তাদের শিক্ষার জন্য যে আন্তরিকতা দেখিয়েছে, তার প্রতিদান দিতে তারা আরও ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান বলে মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন
সিলেট সীমান্তে ৩ কোটি টাকার মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি
রংপুরে জাতীয় পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
কারচুপি ও ষড়যন্ত্রের স্বাক্ষী হয়ে থাকার দল ছাত্রদল নয়-প্রিন্স