December 30, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, December 28th, 2024, 8:26 pm

চিকুনগুনিয়ায় ব্যথা থাকতে পারে কত দিন

ডেঙ্গুর মতোই চিকুনগুনিয়াও এডিস মশার কামড়ে সংক্রমিত হয়

অনলাইন ডেস্ক:

ডেঙ্গুর প্রকোপের সঙ্গে ইদানীং যোগ হয়েছে নতুন ভাইরাসজনিত জ্বর চিকুনগুনিয়া। ডেঙ্গুর মতোই এটি এডিস মশার কামড়ে সংক্রমিত হয়। মাঝে কয়েক বছর এর উপদ্রব না থাকলেও এ বছর দেশে আবার দেখা দিয়েছে। আফ্রিকার আঞ্চলিক ভাষায় চিকুনগুনিয়ার মানে বাঁকা হয়ে যাওয়া। কারণ, এ রোগের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে গিরায় ব্যথা। চিকুনগুনিয়ায় রোগী ৭-১০ দিনে সেরে উঠলেও ব্যথা কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

লক্ষণ
ভাইরাস সংক্রমণের সাধারণত দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। এ রোগে তীব্র জ্বরের সঙ্গে অস্থিসন্ধি বা গিরায় প্রচণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা ও গায়ে ব্যথা হয়। সঙ্গে শরীরে লালচে র‍্যাশ বা চুলকানি থাকতে পারে। এ ছাড়া বমি, ডায়রিয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, খাওয়ায় অরুচি, শারীরিক দুর্বলতাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যেতে পারে।

চিকুনগুনিয়ায় সাধারণত জ্বর দুই থেকে পাঁচ দিন থাকে। মাত্রা ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি হতে পারে। রোগী জ্বরের সঙ্গে অস্থিসন্ধিতে যে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সেটির তীব্রতা বাড়ে। বিশেষ করে হাত–পায়ের আঙুল, গোড়ালি, হাঁটু, কবজিতে তীব্র ব্যথা হয়। অনেক সময় জায়গাগুলো ফুলে যেতে পারে। কখনো ব্যথার তীব্রতা এত বেশি হয় যে রোগীর স্বাভাবিক চলাফেরা ব্যাহত হয়, এমনকি অনেকের দাঁড়াতে কষ্ট হয়, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়।

চিকুনগুনিয়ায় সাধারণত জ্বর দুই থেকে পাঁচ দিন থাকেচিকুনগুনিয়ায় সাধারণত জ্বর দুই থেকে পাঁচ দিন থাকে ছবি:

ব্যথা কত দিন স্থায়ী হয়
ব্যথা জ্বরের পর দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যথা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। তবে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় পরিণত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীরা কয়েক মাস বা কখনো এক বছর বা এরও বেশি সময় ধরে ব্যথা অনুভব করেন। দীর্ঘ সময় ব্যথায় ভোগার দরুন আক্রান্ত ব্যক্তির চলাফেরা, কাজকর্ম ও সাধারণ জীবনযাত্রায় মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।

জটিলতা
● চিকুনগুনিয়ায় ডেঙ্গুর মতো মৃত্যুঝুঁকি না থাকলেও যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল, তাঁদের গুরুতর উপসর্গের ঝুঁকি বেশি।

● বয়স্ক রোগী, বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৬৫ বছর বা এর বেশি, গর্ভবতী নারী কিংবা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, হার্টের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে জটিলতা বেশি হতে পারে। এ ছাড়া কারও যদি চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে ডেঙ্গু, টাইফয়েড কিংবা অন্য কোনো সংক্রমণ হয়ে থাকে, তবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সঠিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় আক্রান্ত হলে বা ব্যথা হঠাৎ বেশি বেড়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. ইসরাত জাবীন, সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন), গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ