অনলাইন ডেস্ক :
চোরেরা সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে দুর্গম একটি পাহাড়ি পথ অতিক্রম করেছে। স্থানীয় একটি পর্বতারোহী ক্লাবের কালেকশন বক্স চুরি করার জন্য তারা পাতলা একটি ইস্পাতের তারের ওপর দিয়ে গিরিসংকট অতিক্রম করেছে এবং ২ হাজার ৩৫০ মিটার উচ্চতায় আরোহণ করেছে। বিবিসি জানায়, লিউকারবাদ গ্রামের ওপরের জেমি পাসে সুইজারল্যান্ডের দীর্ঘতম সংরক্ষিত পর্বতারোহণের ওই পথ দেখভাল করে ক্লাবটি। আর অনুদান বা জমা বাক্সটি যেখানে ছিল সেখানে কেবল অভিজ্ঞ পর্বতারোহীরাই উঠতে পারে। পথটি ভায়া ফেরাতা নামে পরিচিত। খুবই দুর্গম এবং আরোহণ সবচেয়ে কঠিন হওয়ায় একে লেভেল ৫ শ্রেণিতে ফেলা হয়। পথটিতে খাড়া পাথরের সঙ্গে আটকানো সিঁড়ি এবং সরু ইস্পাতের তারের ওপর দিয়ে গিরিসঙ্কট পার হতে হয়।
পর্বতারোহী ক্লাবটি তাদের ফেইসবুক পাতায় লিখেছে, “এরা কী ধরনের মানুষ? ক্লাইম্বিং ক্লাব কোনো বেতন ছাড়াই ভায়া ফেরাতা দেখাশোনা করে। আমরা কিছু চাই না। আর এখন এরা এ পথের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ মেটানোর জন্য রাখা অনুদানের অর্থ চুরি করেছে।” চুরির বিষয়টি যারা ধরতে পেরেছেন তারা মনে করেন, আগে থেকেই সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করেই এমন কাজ করা হয়েছে।
পর্বতারোহী ক্লাব জানিয়েছে, অনুদান বাক্সটি ভাঙা ও খালি অবস্থায় পাওয়া গেছে। চোরেরা যে কেবল ভাল পর্বতারোহী তা নয়, তারা পর্বতারোহণে যেসব জিনিসপত্র লাগে সেগুলোও সঙ্গে নিয়েছিল। এমনকী অনুদান বাক্স ভাঙার যন্ত্রপাতিও ছিল তাদের কাছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল অর্থ চুরির পর তা সঙ্গে নিয়ে পর্বতারোহণ চালিয়ে যায় চোরেরা। ২,৯৪১ মিটার উচ্চতায় দুবহর্ন পাহাড়ের চূড়ায় ওঠে তারা। ঠিক কী পরিমাণ অর্থ চুরি গেছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় পর্বতারোহী ক্লাব। তবে ক্লাবটির সদস্য এবং পর্বত ভ্রমণে গাইড হিসেবে কাজ করা রিচার্ড ওয়েরলেন বিবিসি-কে বলেন, চুরি যাওয়া অর্থের অঙ্ক আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ সুইস ফ্রাঙ্ক (৪৫০-৫৬০ ডলার)।
সুইজারল্যান্ড এমন একটি দেশ যেখানে এখনও নানা কাজে নিয়মিত নগদ অর্থ ব্যবহার হয়। আর হাইকিং এবং পর্বতারোহণ পথে সুইসরা স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজের জন্য গর্বিত। এ ধরনের প্রচেষ্টার জন্য সানন্দে অনেকেই অনুদান দেন। তবে চুরির ঘটনার পর পর্বতারোহী ক্লাবের মতো সংগঠনগুলো তাদের অনুদান নেওয়ার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাবতে পারে। সুইজারল্যান্ডে নগদ অর্থের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ইতোমধ্যেই অনেক সুরক্ষিত এটিএম মেশিনেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। কেবল গত তিন বছরেই লাখো ফ্রাঙ্ক চুরি হয়েছে দেশটিতে।
ফলে সুইস ফেডারেল পুলিশ সতর্ক করে বলেছে, নিয়মিত অর্থ ভরা হয় কিন্তু সতর্কতার সঙ্গে দেখভাল করা হয় না এমন মেশিনগুলো গোটা ইউরোপের চোরদের চুম্বকের মতো আকৃষ্ট করছে। এ মুহূর্তে পর্বতারোহী ক্লাবের সদস্যরা আশা করছেন, চুরিটা যারাই করুক না কেন, ‘অপরাধবোধ’ থেকে তারা চুরির অর্থ চুপচাপ ফিরিয়ে দেবে। অবশ্য গত শনিবার চুরির ক্ষতি পুষিয়ে দিতে স্থানীয় একজন দাতা ক্লাবটির জন্য ৫০০ ফ্রাঙ্ক পাঠানোয় ক্লাবের সদস্যরা কিছুটা সান্ত¡না পেয়েছে।
আরও পড়ুন
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এনসিপি থাকলে ভালো লাগত: আসিফ নজরুল
কিছু কিছু দল ডিস্টার্ব করছে, আমরা লক্ষ্য রাখছি: মির্জা আব্বাস
গাজা পুনর্গঠনে তিন ধাপের পরিকল্পনা, প্রয়োজন ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার