মনিরুল ইসলাম, সাভার : গায়ে প্রেস লেখা পোশাক, লোহার রড হাতে ব্যক্তিটি আপেল মাহমুদ। সাভারে গেল জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশ ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের সাথে মিশে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, মারধর,বিএনপি নেতাদের বাড়িতে হামলা ও হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক মামলার আসামি ডাকাত সর্দার লেগুনা আপেলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এলিট ফোর্স র্যাবের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একটি ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেল ঢাকার সাভার পৌরসভার ভাটপাড়া মহল্লার শুকুর মুন্সি ওরফে শুকুর কসাইয়ের ছেলে। তার বিরুদ্ধে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোসহ সাংবাদিকদের হুমকি, মারধর, হত্যাচেষ্টার অভিযোগও রয়েছে।
পুলিশ জানায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্বজনরা বেশ কিছু মামলা করেছেন। এই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার কথিত সাংবাদিক আপেল মাহমুদ। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে প্রথমে শ্বশুর বাড়ি পাবনা, পরে বগুড়া ও সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। বারবার স্থান পরিবর্তন করায় ৫ দিন অপেক্ষার পর রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সাভার মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে নারায়ণগঞ্জের একটি ভাড়া বাসা থেকে আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া বখাটে আপেল বাবার পেশা কসাই ও লেগুনার ড্রাইভার হিসেবে পেশা শুরু করে পরবর্তীতে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, পাঁচ নারীকে ধর্ষণসহ নানা ধরনের অপরাধের সাথে যুক্ত হয়ে একসময় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বনে যান। সে সময় সাভার মডেল থানার নোটিশ বোর্ডে তার ছবির পাশে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দারকে ধরিয়ে দিন লেখা ছিল। বিভিন্ন মামলায় কারাবাস করে জামিনে মুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় শুরু করেন সাংবাদিকতার নামে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি। সবশেষে গেলো জুলাই-আগস্টে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। একপর্যায়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলে এলাকা ছেড়ে গাঁ ঢাকা দেয়।
আরও পড়ুন
সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মেনে নিলো সরকার
হাসিনা-রেহানা ও টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
রাজউকের প্লট দুর্নীতিঃশেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা