নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সারাদেশের কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট প্রকট বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সারাদেশের কলেজগুলোতে শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করেছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষক ঘাটতি পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। শিগগির এ সংকট কেটে যাবে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিনেট অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাসের সিনেট হলে এ অধিবেশন হয়।
সিনেট অধিবেশনে বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর শিক্ষার মানোন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিস্তরিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহের শিক্ষা কার্যক্রমে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন করতে কারিকুলাম যুগোপযোগী করার কাজে হাত দিয়েছি আমরা। শিগগির এ সংস্কার কাজ দৃশ্যমান হবে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ২৬৩তম সিন্ডিকেট সভার কিছু সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে অধিবেশনে উপাচার্য বলেন, চাকরির ২৫ বছরপূর্তিতে ঐচ্ছিক অবসর গ্রহণের সুযোগ থাকবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। তাছাড়া অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন)-এর ৪৪ ধারা ও ৪৫ ধারাসমূহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও বলবৎ হবে। সিন্ডিকেটের ২৬৩তম সভায় গত ৩ নভেম্বর এ বিধানাবলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান ও সঠিক উন্নয়নের জন্য কর্মপরিকল্পনা এবং কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। গৃহীত কর্মপরিকল্পনার মধ্যে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের উদ্যোগ, সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহার, ব্যয় সংকোচন ও অপচয় রোধ, সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন, আর্থিক কার্যক্রমের অডিট পর্যালোচনা, কলেজ গভর্নিং বডি পুনর্গঠন, অধিভুক্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কার্যক্রম, জমি অধিগ্রহণ ও মডেল ক্যাম্পাস স্থাপনসহ অসংখ্য উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সিনেট অধিবেশনের ভাষণে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, শহীদদের রক্তের ঋণ কখনো শোধ হবে না। এ অভ্যুত্থানে নিহত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শহীদের স্মৃতি চিরজাগ্রত রাখতে অধিভুক্ত কলেজেসমূহে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের জন্য ট্রাস্ট গঠন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে স্মৃতিফলক নির্মাণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবন বা স্থাপনা শহীদ আবু সাইদ ও শহীদ মীর মুগ্ধর নামে নামকরণসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ সিনেট অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও অতিরিক্ত সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদসহ ৬৯ জন সিনেট সদস্য।
অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ এ টি এম জাফরুল আযম এবং সিনেট সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় কনস্টেবল মুকুল কারাগারে
শীতে শিশুদের সুস্থ রাখবে যেসব খাবার
দীর্ঘদিন পর ফেরা তারকারা