নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে কিন্তু তার কম বয়সী জনগোষ্ঠীর কোনো তথ্যভা-ার নেই। আবার ১৮ ঊর্ধ্ব নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও এর মাধ্যমে পারিবারিক ধারা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। সবার তথ্য নিয়ে অন্যান্য দেশের মতো একটি জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য দেন পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারি, আইএমইডির সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, বিবিএসের মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিএসের পরিচালক ড. মো. শাহাদত হোসেন। প্রবন্ধে বলা হয়, নতুন এনপিআরে শূন্য থেকে শুরু করে সব বয়সী বাসিন্দার জনতাত্ত্বিক ও বায়োমেট্রিক তথ্য স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি প্রত্যেকের জন্য একটি স্বতন্ত্র শনাক্তকরণ নম্বর দেওয়া হবে। এর ফলে প্রত্যেককে সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এই তথ্যভা-ারের মাধ্যমে সব ধরনের জনমিতিক পরিসংখ্যান, আগমন-বহির্গমন, জন্ম-মৃত্যু, বিবাহ-তালাক প্রভৃতি তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুত করা সম্ভব। কর্মশালায় জানানো হয়, এনপিআরের মাধ্যমে পারিবারিক ধারা প্রস্তুত করা হবে ও এতে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতা দূর হবে। এতে প্রত্যেককে জন্মের পরপরই অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং মৃত্যুর পরও তার তথ্য মুছে ফেলা হবে না। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, যে প্রেজেন্টেশন দেখলাম তাতে মনে হচ্ছে, এটা একটা কঠিন কাজ। এটাকে সাজানো-গোছানো অনেক চ্যালেঞ্জের। বিবিএসকে এই কাজ করতে পারবে। তাদের সেই সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা আছে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বিবিএসের পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। অন্যান্য কাজগুলো আমরা করছি, এই কাজটিও আমরা সাহসের সঙ্গে হাত দেবো। ড. শামসুল আলম বলেন, আজ আমরা একটি মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে। এনপিআর ইউরোপের অনেক দেশ ও ভারতের অনেক রাজ্যেই রয়েছে। নেদারল্যান্ডসে এই এনপিআরের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। সেখানকার নাগরিকরা তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা চেয়ে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার জন্য আইন পরিবর্তন করতে বলেছিল। বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত তথ্য বাণিজ্যিক করা হবে না। আমাদের এখানেও হয়তো আইনের পরিবর্তন করা লাগতে পারে। তিনি বলেন, খেয়াল রাখতে হবে তথ্যের দ্বৈততা যেন না হয়। কারণ আমাদের জনশুমারি আছে, ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ, এনআইডি ডাটাবেজ, জনশুমারি আছে। আবার এনপিআর করছি। সবগুলোই কাছাকাছি। প্রত্যেকের আইডেন্টটিফিকেশন এসব ডাটাবেজে আছে। জটিলতা ও সময় বাঁচাতে সব অথরিটির সঙ্গে বসে সমন্বয় করতে হবে। যাতে ডুপ্লিকেশন, ওভারলেপিং বা এ ধরনের বিষয়গুলো না হয়।
আরও পড়ুন
কাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ শুরু: উপদেষ্টা
টেস্ট ক্রিকেট: মরণদশা থেকে বাঁচানোর উপায় কী
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি