অনলাইন ডেস্ক
জীবন সায়াহ্নে যে দোয়া পড়লে জাহান্নাম স্পর্শ করবে নামৃত্যু অমোঘ বাস্তবতা। এই ক্ষণস্থায়ী জীবন শেষ করে আমাদের সবাইকেই একদিন মৃত্যুর কাছে ধরা দিতে হবে। এই দুনিয়ার সফর শেষ করে পাড়ি জমাতে হবে পরপারে এবং মহান রাব্বুল আলামিনের সামনে নিজের কৃতকর্ম নিয়ে দাঁড়াতে হবে। তিনি আমাদের পাপ ও পুন্যের হিসাব নেবেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
قُلۡ اِنَّ الۡمَوۡتَ الَّذِیۡ تَفِرُّوۡنَ مِنۡهُ فَاِنَّهٗ مُلٰقِیۡكُمۡ ثُمَّ تُرَدُّوۡنَ اِلٰی عٰلِمِ الۡغَیۡبِ وَ الشَّهَادَۃِ فَیُنَبِّئُكُمۡ بِمَا كُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ
বল যে মৃত্যু থেকে তোমরা পালাচ্ছ তা অবশ্যই তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। তারপর তোমাদেরকে অদৃশ্য ও দৃশ্য সম্পর্কে পরিজ্ঞাত আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেয়া হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করতে। (সুরা জুমআ: ৮)
মৃত্যু থেকে পালানোর বা বেঁচে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই যতো দিন আল্লাহ তাআলা বাঁচিয়ে রেখেছেন, নেক আমলের সুযোগ দিয়ে রেখেছেন, বেশি বেশি নেক আমল করে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতে জাহন্নাম থেকে মুক্তি লাভ করার উপায় হলো আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আল্লাহর নির্দেশগুলো যথাযথভাবে পালন করা, নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে দূরে থাকা। এ ছাড়া আখেরাতে মুক্তি লাভের কোনো সংক্ষীপ্ত উপায় নেই।
আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার সর্বোচ্চ চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে, দোয়ার মাধ্যমেও আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করতে পারি। কোরআনে ও হাদিসে ফজিলতপূর্ণ ও বরকতময় অনেক কালিমা ও দোয়া বর্ণিত হয়েছে যা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনে সহায়ক।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) ও আবু হোরায়রা (রা.) থেকে একটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে, যে দোয়া জীবন সায়াহ্নে পাঠ করলে অর্থাৎ মৃত্যু পূর্ববর্তী অসুস্থতার সময় দোয়াটি পড়লে সে জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে যাবে বলে আশা করা যায়। দোয়াটি হলো:
لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ لَا إِلَهَ إِلَّا الله وَلَا وحول وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা হাওলা ওয়ালা ক্যুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আল্লাহ মহান। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তার কোনো শরিক নেই। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তার জন্যই সব ক্ষমতা ও সব প্রশংসা। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারো কোন উপায় ও শক্তি নেই।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) ও আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তারা উভয়ে বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই এবং আল্লাহ সুমহান, আল্লাহ তাআলা তার কথা সমর্থন করে বলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনা, ওয়া আনা আকবার’ অর্থাৎ আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি মহান।
যখন সে বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহূ লা শারীকা লাহূ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোন শরিক নেই তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনা ওয়াহদী, লা শারীকা লী’ অর্থাৎ হ্যাঁ, আমি একক, আমার কোন শরিক নেই।
যখন ওই বান্দা বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবুদ নেই, তারই রাজ্য ও তারই প্রশংসা। তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনা লিয়াল মুলকু ওয়া লিয়াল হামদু অর্থাৎ হ্যাঁ, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, আমারই রাজ্য এবং আমারই প্রশংসা।
বান্দা যখন বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়ালা হাওলা ওয়ালা ক্যুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই এবং আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারো কোন উপায় ও শক্তি নেই। তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনা লা হাওলা ওয়ালা ক্যুওয়াতা ইল্লা বী’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমার সাহায্য ছাড়া কারো কোন উপায় ও শক্তি নেই।
নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, যে ব্যক্তি এ কালিমাগুলো নিজের অসুস্থতার সময়ে পড়ে, তারপর মৃত্যুবরণ করবে, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। (সুনানে তিরমিজি: ৩৪৩০)
যে কোনো অসুস্থতার সময় এবং অন্যান্য সময়ও এই বরকতময় কালিমাগুলো আমরা পাঠ করতে পারি।
আরও পড়ুন
খরগোশের গোশত খাওয়া নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে
মাওলানা সাদের অনুসারীদের সড়ক অবরোধ : রাজধানীতে তীব্র যানজট
বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ