September 9, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, September 9th, 2025, 6:21 pm

টকশোর আড়ালে আ. লীগকে পুনর্বাসন ও ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন

 

গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রমনা থেকে সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তারের করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

শাহবাগ থানার একটি মামলায় সাবেক এ সচিব গ্রেপ্তারের পর থেকে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা।

যিনি এতদিন টেলিভিশন টকশোগুলোর নিয়মিত ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনি হঠাৎ করেই ‘মঞ্চ ৭১’ ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের উত্থানকালে আবু আলম শহীদ খান সচিবালয়ের ‘জনতার মঞ্চ’ কর্মসূচির অন্যতম সংগঠক ছিলেন এবং সেই সুবাদে পান পুরস্কারও—প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবের পদ।

বিএনপি আমলে (২০০১–২০০৬) তিনি রাজনৈতিক কারণে ওএসডি ছিলেন, কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরতেই তার পদোন্নতির রেকর্ড যেন প্রশাসনের ইতিহাসে বিরল নজির গড়ে। মাত্র তিন মাসে চার ধাপ উঁচুতে উঠে তিনি সিনিয়র সচিব হন।

২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পরও তিনি সরকারের প্রভাবশালী অবস্থানে ছিলেন। অবসরের (২০১৫) পরেও আওয়ামী লীগের প্রতি তার আনুগত্য কমেনি। তিনি যমুনা টেলিভিশনের সিইও হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

তার এমন পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে—তিনি কি সত্যিই নিরপেক্ষ ছিলেন, নাকি টকশোর আড়ালে লুকিয়ে রেখেছিলেন বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য? জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তিনি আলোচনার মঞ্চ ছাড়েননি। বরং রাজনৈতিক বিশ্লেষক পরিচয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য, নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে নানা দিকনির্দেশনা দেওয়া—এসব হয়ে উঠেছিল তার প্রতিদিনের কাজ।

গ্রেপ্তারের কয়েকদিন আগে তিনি বলেছিলেন—আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়। এই বক্তব্য থেকেই অনেকের সন্দেহ দৃঢ় হয়, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েও তার ঘনিষ্ঠ মহল মাঠে রয়ে গেছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, আবু আলম শহীদ খান আসলে টকশোকে ব্যবহার করছিলেন আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের হাতিয়ার হিসেবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে দুর্বল করার প্রচেষ্টায়।

জনতার মঞ্চ থেকে মঞ্চ ৭১—এই দীর্ঘ পথচলা বলে দেয়, আবু আলম শহীদ খানের মতো সুবিধাভোগীরা সময় ও মুখোশ বদলালেও লক্ষ্য থেকে সরে আসেননি। তার প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করা এবং টকশোর আড়ালে একরে পর এক ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা।

এনএনবাংলা/