October 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 6th, 2023, 10:08 pm

ডিজিটালাইজেশনের মধ্যেও ত্রুটিমুক্ত হয়নি পাসপোর্টের আবেদন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ডিজিটালাইজেশনের মধ্যেও পাসপোর্টের আবেদন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া এখনো ত্রুটিমুক্ত করা যায়নি। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশী পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা ও অপরাধীরা। পাসপোর্ট যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) বেঁধে দেয়া মানও রক্ষা হচ্ছে না। এ পরিস্থিতির জন্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা নানা ধরনের ভুল ও ত্রুটিপূর্ণ পাসপোর্টের জন্য অতিরিক্ত কাজের চাপকে দায়ি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাসপোর্টের মান উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ এ সেবা অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে হওয়া উচিত। পাসপোর্ট অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আইসিএও বিশ্বব্যাপী নিরাপদ ও দক্ষ বিমান পরিবহনের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে এয়ারওয়েজ, এয়ারপোর্ট এবং এয়ার নেভিগেশন সুবিধার উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে কাজ করে থাকে। সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচলের নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল বিকাশের জন্য ১৯৪৪ সালে সংস্থাটি তৈরি করা হয়েছিল। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক এ সংস্থা ফ্লাইট অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সব চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রের জন্য ন্যায্য সুযোগ নিশ্চিত করে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের নীতি ও কৌশল পরিবর্তন করে এবং নিরাপদ ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধি নিশ্চিত করাও সংস্থাটির লক্ষ্য।

সংস্থাটি তার ১৯১টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচলের সব ক্ষেত্রে সহযোগিতার ফোরাম হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আইকাওর ট্রেইনার প্লাস অ্যাসোসিয়েট মেম্বারশিপ সনদ পেলেও এ তালিকায় নেই বাংলাদেশ পাসপোর্ট।

সূত্র জানায়, পাসপোর্টের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আইসিএওর বেঁধে দেয়া মানদন্ড অনুযায়ী পাসপোর্টে ব্যবহৃত ছবি অবশ্যই ২ বাই ২ ইঞ্চি হবে। ছবিটি অবশ্যই উজ্জ্বল এবং স্বচ্ছ হতে হবে। স্কিনটোন স্বাভাবিক থাকবে। কোনো অবস্থাতেই কালচে বা ফ্যাকাশে ছবি গ্রহণযোগ্য হবে না। ছবিতে মাথা থেকে কাঁধ পর্যন্ত স্পষ্টভাবে দেখা যেতে হবে। ছবির ব্যক্তির দৃষ্টি একদম সোজাসুজি থাকতে হবে। ছবির ৭০-৮০ শতাংশ জায়গাজুড়ে মুখ বা চেহারা থাকবে। চোখ খোলা থাকবে। রেড আই ছবি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। ছবিতে কোনো লাইন বা দাগ থাকতে পারবে না এবং ছবিটি অবশ্যই স্টুডিও প্রিন্ট হতে হবে। এ মানদন্ড মেনে পাসপোর্টে আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ত্রুটিমুক্ত পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব।

এদিকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরও মনে করে, আন্তর্জাতিক এ সংস্থার বেঁধে দেয়া মান অনুসরণ করা প্রয়োজন। গত মে মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সভায় পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসরণ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে অধিদপ্তর। সেখানে বলা হয় আইকাও মানদন্ড অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ জনের এমআরপি বা ই-পাসপোর্টের আবেদন যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করতে পারেন।

কিন্তু বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা গড়ে ১০০টিরও বেশি আবেদন যাচাই-বাছাই করেন। ফলে অধিকাংশ সময় দাপ্তরিক কাজ মানসম্মত রাখা সম্ভব হয় না। প্রতিদিন প্রাপ্ত গড় আবেদনের সংখ্যা এবং আইসিএও মানদন্ড অনুযায়ী আবেদন নিষ্পত্তির জন্য পাসপোর্ট অধিদপ্তরের আরো জনবল নিয়োগের ব্যাপারে সুরক্ষা সেবা বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক সেবার সহযোগিতা প্রয়োজন।