অনলাইন ডেস্ক :
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকলেও আগেই সরে গেলেন ডোমিঙ্গো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) সে (ডমিঙ্গো) পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন এবং অবিলম্বে তা কার্যকর হবে।’ ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ শেষ হবার দু’দিন পর পদত্যাগ করলেন ডোমিঙ্গো। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলেও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে বিসিবির সাথে সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করে ডোমিঙ্গোর। যখন সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে স্কটল্যান্ডসহ সব ম্যাচ হেরে তলানিতে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু নানা কারণে তার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানতে পারেনি বিসিবি। কারিগরি উপদেষ্টার মোরকে শ্রীধরন শ্রীরামকে টি-টোয়েন্টি দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর ডোমিঙ্গোকে পদ থেকে সরানো হলো। বিভিন্ন সময়ে স্পষ্ট করেই ডোমিঙ্গো বলেছেন যেভাবে টি-টোয়েন্টি সেট আপ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিলো তাতে সন্তুষ্ট নন তিনি। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ চলাকালীন দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিলেন ডোমিঙ্গো। তখন এটি ভাবা হয়েছিল, হয়তো বাংলাদেশে ফিরে আসবেন না এবং পদত্যাগপত্র পাঠাবেন তিনি। তবে দেশে ফিরে ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজে দলের দায়িত্ব পালন করেন ডোমিঙ্গো। কিন্তু বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বাংলাদেশের কোচিং সেট আপ সংশোধনের ইঙ্গিত দিলে, আবারও সবকিছু তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। ঢাকা টেস্টের পরপরই সাংবাদিকদের ইউনূস বলেন, ‘আমাদের এমন একজন কোচ দরকার যে কি-না দলের ওপর প্রভাব রাখবে। আপনি শীঘ্রই কিছু পরিবর্তন দেখতে পাবেন। আমরা চেষ্টা করছি। আমরা খুব শক্তিশালী দল চাই যারা মানসম্পন্ন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলবে। আমরা ভারতকে হারানোর কাছেই গিয়েছিলাম কিন্তু এই দলকে হারানো কঠিন। আমরা এই মাঠে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছি। তবে এই পরিস্থিতিতে ভারত আরও শক্ত প্রতিপক্ষ।’ এরপর মাত্র ২৪ ঘন্টা পর বিসিবি বস পাপন ইঙ্গিত দেন, পারফরমেন্সে খুশি হলেও বাদ দেয়া হতে পারে ডোমিঙ্গোকে। পাপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি, এটি স্বল্পমেয়াদী নয়। এটি তিন থেকে চার বছরের একটি পরিকল্পনা এবং যদি পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় (সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য) তবে পরিবর্তন হবে।’ ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষে বিসিবি কর্তৃক স্টিভ রোডসকে বরখাস্ত করার কয়েক মাস পর একই বছরের সেপ্টেম্বরে ডোমিঙ্গো প্রধান কোচ হিসেবে যোগ দেন। তার অধীনে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে একটি টেস্ট (প্রথমবারের মতো), দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জিতে। এদিকে, ডোমিঙ্গোর পরিবর্তে বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এবং অস্ট্রেলিয়ার মাইক হাসি। যদি নতুন কোচ নিয়োগের জন্য দীর্ঘ সময় লাগে, তবে মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সাদা বলের সিরিজে জাতীয় দলের কোচ হতে পারেন শ্রীধরন শ্রীরাম।
আরও পড়ুন
বিপিএলের মাঝপথে খুলনা টাইগার্সে আরো ২ বিদেশি ক্রিকেটার
মেসির দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
জয় দিয়ে টি–টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের