March 28, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, March 24th, 2025, 12:26 pm

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ৪ লেন যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত

আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর : ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক)-২ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চলাচলের জন্য মূল ৪ লেন উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মর্ডান মোড় পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেন খুলে দেওয়ায় উত্তরের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগ যাত্রার সময় অন্তত ২ ঘণ্টা কমে আসবে। শুধু তাই নয়, সড়কপথে আসা যাত্রীরা যানজটের ভোগান্তির শিকার হবে না। ফলে এ অঞ্চলে শিল্প কলকারখানা স্থাপনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। পরিবহণ ব্যবস্থায় বাড়বে গতি।

সাসেক-২ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহসিন হাওলাদার জানান, ১৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এমন আশা করা যাচ্ছে। এ সড়ক পথের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার সঙ্গে যাত্রী পরিবহণের সময় গড়ে আড়াই ঘণ্টা কমে আসবে।

তিনি বলেন, এখন বিশেষ করে ঈদের সময় এ সড়কপথে যানজটের কারণে ঢাকা-রংপুর প্রায় ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগে। স্বাভাবিক সময়ে সময় লাগে প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। এ সড়কের নির্মাণ রংপুর, বগুড়া ও গাইবান্ধা অংশে ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ব্রিজ-কালভার্ট, আন্ডারপাস ও উড়াল সড়কের কাজসহ অন্যান্য কাজ সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে।

তিনি বলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও রংপুর জেলার শঠিবাড়ি এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কাজ সম্পন্ন করতে বিলম্ব হয়েছে। এ অংশ ছাড়া বাকি সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি যেসব কাজ রয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে। সেভাবে কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে। সব বিবেচনা করে আসন্ন ঈদ ঘিরে চার লেন সড়ক শুক্রবার (২১ মার্চ) খুলে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সড়ক অবকাঠামোর পাশাপাশি ইন্টিলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম উন্নতিকরণ, টোলপ¬াজা, সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি গবেষণাগার নির্মাণ এবং হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ টেন্ডার দেরিতে হওয়ায় এ কাজ লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে ২০২৬ সালে শেষ হবে। এ প্রকল্পটি সাসেক-২ এর আওতায় চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারের সঙ্গে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সড়ক বিভাগের সাসেক-২ প্রকল্পের উপপ্রকল্প ম্যানেজার-৮ নাশিদ হাসান সিরাজী জানান, এ অঞ্চলের মানুষের সড়কপথে যাতায়াত করাতে যানজটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো। রংপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৩২২ কিলোমিটার। অথচ সড়ক পথে যেতে সময় লাগে গড়ে ১০ ঘণ্টা। ঈদের সময় কখনো কখনো ২০ ঘণ্টা লেগে যায়।

দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার জেলার সঙ্গে আনুপাতিক হারে একইরকম সময় লাগে সড়ক পথে যাতায়াত করতে। এ ভোগান্তির অবসান হয়েছে সড়কের চারটি লেন খুলে দেওয়ায়। ধীরগতির যানবাহন চলাচলের লেন দুটি খুব দ্রুত খুলে দেওয়া হবে।

হাটিকুমরুল থেকে রংপুরের চার লেন মহাসড়কের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এর পাশাপাশি গড়ে উঠবে শিল্প কলকারখানা। প্রসারিত হবে ব্যবসা বাণিজ্য। এসব হলে সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান। এ অঞ্চলের মানুষের যে ঢাকামুখী যাওয়ার প্রবণতা তাও কমে আসবে।

এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন সড়কের কাজ ২০১৯ সালের জুন শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনা মহামারির দুর্যোগ, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে টালমাটাল পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে প্রকল্পের গতি কমে যাওয়ায় এখন তা ২০২৬ সালের শেষ কারার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।