October 18, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, October 18th, 2025, 8:47 pm

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন, নদীর তীরে মশাল প্রজ্জ্বলন তিস্তাপাড়ের লক্ষাখিক মানুষের

রংপুর ব্যুরো চীফ:

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ নদীর তীরে মশাল প্রজ্জ্বলনে কর্মসূচি পালন করেছে তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষ।জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকারকে নিজস্ব অর্থায়নে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র কাজ শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন তিস্তাপাড়ের ৫জেলার ১২টি উপজেলার  মানুষ।

গতকাল  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ দাবিতে তিস্তা নদীর উভয় তীরে একযোগে মশাল প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়।‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা—লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি পয়েন্টে একযোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।মশাল হাতে অংশগ্রহণকারীরা একযোগে স্লোগান দেন— ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই।’‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর প্রধান সমন্বয়ক, সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু লালমনিরহাটের তিস্তা সেতুর সংলগ্ন চরে আয়োজিত পয়েন্টে সর্ববৃহৎ এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।লালমনিরহাটের তিস্তা সেতুর সংলগ্ন পয়েন্ট ও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্ট পাশাপাশি হওয়ায় সেখানে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

এ সময় অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন,‘তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, জীবিকার অনিশ্চয়তায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে।’নদী রক্ষায় জনগণের এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান প্রমাণ করে যে তিস্তা ইস্যুটি এখন আর কেবল পরিবেশগত বা অর্থনৈতিক নয়, এটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন।’তিনি আরও বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের জন্য রাজধানীমুখী লংমার্চে নামতে বাধ্য হবে। তিস্তা শুধু রংপুর বিভাগের নদী নয়, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ।

এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগ অচল করে দেওয়া হবে।’তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর সংশ্লিষ্টরা বলেন, উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তিস্তা নদীর ওপর নির্ভরশীল। বর্ষাকালে বন্যা, পরবর্তী সময়ে নদীভাঙন ও শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট—এই তিনটি দুর্যোগ এখন তিস্তাপাড়ের মানুষের নিত্যদিনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিস্তা নদীর রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘আমরা নজিরবিহীন আন্দোলন করেছি। বিগত ১৬ বছর আন্দোলন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ তিস্তা অববাহিকার মানুষের সামনে মূলা ঝুলিয়ে প্রতারণা করেছে। আমরা আর প্রতারিত হতে চাই না। আজকে তিস্তার দুই পারে আমরা যে মশাল প্রজ্বলন করলাম। এর মাধ্যমে অন্তর্র্বতী সরকারকে আমরা জানিয়ে দিলাম, আমাদের ভেতরের যে আগুন ছিল সেটি আমরা বাহিরে আনলাম। নভেম্বর মাসের মধ্যেই মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করা না হলে এই আগুনের দাবানল দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। দুই কোটি মানুষের জীবন জীবিকাকে সংকটে রেখে বৈষম্যবিহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তফসিল ঘোষণার আগেই নভেম্বরে মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করা না হলে উত্তরবঙ্গ স্তব্ধ সহ ভিন্নভাবে এই বঙ্গ কে অচল করে দেয়া হবে।এই মশাল প্রজ্বলন কর্মসূচি নীলফামারী রংপুর লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম গাইবান্ধার তিস্তা অববাহিকার বারটি উপজেলার তিস্তা তীরে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি অংশে হাজার হাজার মানুষ মশাল প্রজ্বলন করেন।

গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ জেলার ১১টি স্থানে একযোগে অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়, যাতে লাখো মানুষ অংশ নেন।পর্যায়ক্রমে উপজেলা ও জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয়।