February 22, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, February 19th, 2025, 10:44 am

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে পদযাত্রা হাঁটু পানিতে নেমে প্রতিবাদ

আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর :পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তার ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ক্ষোভ ও দাবির পদযাত্রা করছেন ‘তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। পানির নায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে মৃত প্রায় তিস্তা নদীর হাঁটু পানিতে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় তিস্তার উত্তর পাশ থেকে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় এই পদযাত্রা করা হয়েছে। রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার ১১টি পয়েন্টে  ২৩০ কিমি এলাকায় এ কর্মসূচি একযোগে শুরু হয়। তিস্তা ব্রিজ থেকে গণপদযাত্রাটি শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে বিকেলে শেষ হয়।এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু। তিনি বলেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা এবং মহাপরিকল্পনার জন্য এক দশক ধরে তিস্তার পাড়ের মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন।এ কর্মসূচির মাধ্যমে তিস্তা পানি নিয়ে বৈষম্যের বিষয়টি গোটা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
পদযাত্রায় অংশ নেন শিশু-কিশোর, যুবক, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাষি, দিনমজুর, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এসময় “জাগো বাগে কোনটে সবাই, দাবি মোদের একটাই- তিস্তাায় পানি চাই ‘ স্লোগানে মুখরিত হয় তিস্তা অববাহিকা।
এই স্লোগান তোলা হয় নীলফামারীর ডিমলার ছাতনাই থেকে শুরু করে রংপুর, লালমনিরহাট, কুুড়িগ্রাম হয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত তিস্তা অববাহিকার ২৩০ কিলোমিটার এলাকায়। ১১টি স্পটে এই কর্মসূচি পানল করছেন তিস্তা পাড়ের মানুষরা।
৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিচ্ছে, বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
এমন পরিস্থিতিতে নদী গবেষক ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটি মানুষের জীবনমান রক্ষায় একমাত্র সমাধান হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। নদীকেন্দ্রীক কৃষিজমি রক্ষা, ভাঙন রোধসহ চরগুলো রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উজানের পলিতে নদীর বুক ভরাট হলে স্বল্প পানিতে প্রতিবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। তারা মনে করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি তিস্তা নদীর সুরক্ষার বিষয়টিও এখন জরুরি।
দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে প্ল্যাকার্ড, গান, কবিতা আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তিস্তার ভাঙনে সর্বস্ব হারানো নিয়ে বাস্তব অভিনয়, খেলাধুলা এবং স্মৃতিচারণ করেছে ।