দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত এলাকায় চলমান সংঘর্ষে কয়েকদিনে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে বহু মানুষ। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হঠাৎই দৃশ্যপট বদলে যায়—সামনে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্কটল্যান্ড সফরে থাকা অবস্থায় তিনি দুই দেশের নেতার সঙ্গে ফোনে বলেন—যুদ্ধ থামাও, না হলে বাণিজ্য বন্ধ থাকবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার স্কটল্যান্ডে নিজের ব্যক্তিগত গলফ রিসোর্টে সফরের শুরুতে ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, উভয় দেশ যুদ্ধবিরতি ও শেষ পর্যন্ত শান্তির লক্ষ্যে দ্রুত আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে।
থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইও ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতিতে থাইল্যান্ড সম্মত হলেও তারা কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে ‘আন্তরিকতার প্রমাণ’ দেখতে চায়।
২৪ জুলাই সীমান্তে গোলাগুলি শুরুর পর থেকে দুই দেশের অন্তত ৩৩ জন সেনা ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও হাজারো মানুষ। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প জানান, সংঘাত চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে শান্তি প্রতিষ্ঠার পর আলোচনায় ফিরে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া থেকে আমদানি করা পণ্যে ৩৬ শতাংশ কর আরোপের কথা রয়েছে। তার আগে ট্রাম্পের এমন বিবৃতি কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, কাম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত এবং থাই প্রধানমন্ত্রী ফুমথামের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি আরও লেখেন, যখন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন আমি উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার অপেক্ষায় আছি।
তবে ট্রাম্প ঠিক কীভাবে এ আলোচনায় যুক্ত হলেন, তা স্পষ্ট নয়। কারণ এক দিন আগেই থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়ামপংসা বলেছিলেন, এখনই তৃতীয় কোনো দেশের মধ্যস্থতা প্রয়োজন নেই বলে আমরা মনে করি।
এর আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতায় আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। শনিবারই কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘শর্তহীন অস্ত্রবিরতির’ প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে অবস্থান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, এই সীমান্ত বিরোধের ইতিহাস এক শতাব্দীরও বেশি পুরোনো। ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলের সময় সীমানা নির্ধারণ ঘিরে এ বিরোধের সূচনা হয়, যা এখনো পুরোপুরি নিরসন হয়নি।
এনএনবাংলা/আরএম
আরও পড়ুন
এক বছরে বিএনপির আয় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা
১৭৩ যাত্রী নিয়ে ওড়ার আগমুহূর্তে বিমানে আগুন
আরও ৮০ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া