যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডায় এক নারী নির্বাসন আদেশ অমান্য করে দীর্ঘ ২০ বছর বসবাস করায় প্রায় ১.৮২ মিলিয়ন ডলারের অভিবাসন জরিমানার মুখোমুখি হয়েছেন। মারিয়া নামে পরিচিত ৪১ বছর বয়সী হন্ডুরাসের এই অভিবাসীর জরিমানা প্রতিদিনের জন্য ৫০০ ডলার হারে হিসাব করা হয়েছে, যা ২০০৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ধরা হয়েছে।
এর আগে ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মারিয়া ক্যালিফোর্নিয়া হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। দুই মাস পর একটি অভিবাসন শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে নির্বাসন আদেশ জারি করা হয়। তবে তিনি দাবি করেছেন, তিনি কোনো নথি পাননি এবং কোথায় থাকবেন সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ জানত না।
মারিয়ার আইনজীবী মিশেল সানচেজ জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ২০ বছর ধরে বসবাস করছেন, তার কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই এবং তার তিন সন্তানই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। সানচেজ ২০২৪ সালে মামলাটি পুনরায় খোলার আবেদন করেন, কিন্তু ২০২৫ সালের মার্চে সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
এই জরিমানা ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের অধীনে আরোপিত হয়েছে, যা সাধারণত খুব কমই প্রয়োগ করা হয়। সানচেজ বলেন, ‘এই ধরনের বিশাল অঙ্কের জরিমানা তার জীবনে প্রথম দেখেছেন।’
মারিয়া বলেন, ‘আমি প্রতিদিন উদ্বেগ নিয়ে বাঁচি… আমি ঘুমাতে পারি না… আমি অনুভব করি না। আমি ফিরে যেতে চাই না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক হবে, এটি তাদের দেশ, তারা এখানেই বড় হয়েছে।’
এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসন নীতির কঠোর বাস্তবতা এবং দীর্ঘদিনের অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য সম্ভাব্য আইনি পরিণতি তুলে ধরে।
এর আগে এ বছরের এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন অভিবাসন নীতির অধীনে ৩১ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সমকালের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন সূত্রের এ খবর জানা গেছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ফেব্রুয়ারি থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন। যেখানে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ৩০ পুরুষ ও একজন নারী।
অভিবাসন-সংক্রান্ত মামলায় হেরে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন এবং বিভিন্ন মামলায় সাজা হয়েছে এমন ব্যক্তিদেরই ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকায় যাদের পাঠানো হয়েছে, তাদের মধ্যে তিন জনকে এসকর্ট বা বিশেষ নিরাপত্তাসহ পৌঁছে দিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরা। বাকি বাংলাদেশিদের সাধারণ যাত্রীর মতো পাঠানো হয়েছে।
সর্বশেষ একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে পাঁচ বাংলাদেশিকে। ফ্লাইটটি একই ধরনের যাত্রী নিয়ে নেপাল হয়ে বাংলাদেশে আসে।
আরও পড়ুন
উপদেষ্টা রিজওয়ানার গাড়িবহরে হামলা
গাজায় ভয়াবহ পরিস্থিতি, ক্ষুধায় কাতরাচ্ছে শিশুরা
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী নজরুল জয়ন্তী উৎসব ও বইমেলা