আজ ২০শে জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, এবং দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশের ঝড় তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
সমর্থকদের তিনি বলেছেন যে শপথ নেওয়ার পরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ‘ঐতিহাসিক গতি এবং শক্তি’ নিয়ে কাজ করবেন।
সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির ওয়ান এরেনায় বিজয় সমাবেশে হাজার হাজার সমর্থকের সামনে বক্তব্য দেয়ার সময় ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
সেইসঙ্গে তিনি তার আসন্ন চার বছরের পরিকল্পনার কথা জানান। সেইসাথে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে তার নভেম্বরের বিজয় উদযাপন করেন।
মি. ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া, পরিবেশ রক্ষায় নিয়মের কড়াকড়ি কমানো এবং ডাইভারসিটি প্রোগ্রাম বন্ধ করার মতো বড় বড় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।
“আমরা আমেরিকাকে প্রথমে রাখবো, আর কাল থেকেই এর কাজ শুরু হবে।”
ট্রাম্প সমাবেশে আরো বলেন, “আপনারা আগামীকাল টেলিভিশন দেখে অনেক মজা পাবেন।”
ট্রাম্প সোমবার দুই শতাধিক নির্বাহী পদক্ষেপে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাহী আদেশ, যা আইনত বাধ্যতামূলক হবে সেইসাথে আছে প্রেসিডেন্টের অন্যান্য নির্দেশনা, যা সাধারণত বাধ্যতামূলক হয় না।
“বাইডেন প্রশাসনের প্রতিটি উগ্র ও উদ্ভট নির্বাহী আদেশ শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাতিল করা হবে,” বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নত করা, সরকারের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি বিভাগ গঠন করা (ডোজ), জন এফ কেনেডির হত্যা সম্পর্কিত রেকর্ড প্রকাশ করা, সামরিক বাহিনীকে আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া এবং সেনাবাহিনী থেকে বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তি নীতি বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এছাড়া ট্রান্সজেন্ডার নারীদের, ‘নারী’ ক্রীড়া বিভাগে প্রতিযোগিতা বন্ধ করা এবং আমেরিকার রাজ্যগুলোর হাতে শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
প্রেসিডেন্টরা সাধারণত দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাহী আদেশ জারি করেন, তবে মি. ট্রাম্পের প্রথম দিনের আদেশের সংখ্যা তার পূর্বসূরিদের তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে এবং এর অনেকগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সোমবার তার নির্বাহী পদক্ষেপগুলো অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা কেন্দ্রীক হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি বিশাল লজিস্টিক বাধার সম্মুখীন হবে এবং সম্ভবত কয়েক বিলিয়ন ডলারের খরচও হতে পারে।
২০২১ সালের ছয়ই জানুয়ারি ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঘটনায় দোষী সাব্যস্তদের জন্য ট্রাম্প ক্ষমা ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ওই হামলার নেতৃত্বে তার সমর্থকরাই ছিলেন।
সোমবারের বিজয় সমাবেশে ট্রাম্পের সাথে তার পরিবারের সদস্যরাও মঞ্চে যোগ দেন, যার মধ্যে ছিলেন ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক এবং এরিকের স্ত্রী লারা ট্রাম্প।
রোববারের তুষারপাত এবং প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে সোমবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আর বাইরে হচ্ছে না।
গত ৪০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ক্যাপিটলের ভেতরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শপথ গ্রহণের দিন তাপমাত্রা প্রায় হিমাঙ্কের ছয় ডিগ্রী সেলসিয়াস নীচে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মি. ট্রাম্প জানিয়েছেন, শপথ নেওয়ার পর তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেবেন। তার ভাষণের মূল বিষয় হবে ঐক্য, শক্তি এবং “ন্যায়বিচার”।
আরও পড়ুন
ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির পর যুক্তরাষ্ট্রে আবারও চালু টিকটক
বদলে যাচ্ছে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের পোশাক
বিচারপতিদের অবসরের বয়স ৭০ করার প্রস্তাব