অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে সাড়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের আরও ছয় মাস করে কারাভোগ করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মুহা. আবু তাহের এ রায় দেন।
আসামিরা এ পর্যন্ত যত দিন কারাভোগ করেছেন, তা তাদের সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আজ রায় ঘোষণার দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর। রায় ঘোষণা শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি ও মিনি বার বাবদ মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওই হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেন; যার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। দুদকের অনুসন্ধানে মোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্যের কথা উল্লেখ করা হয়।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এই পাঁচ বছরে বাসাভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ করা এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগ করা ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর নামে জমা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি তদন্তে।
এদিকে র্যাবের অভিযানে পাপিয়ার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং তাঁর স্বামীর নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের তদন্তে।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া, তাঁর স্বামী ও তাঁদের দুই সহযোগীকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১-এর একটি দল। তাঁদের কাছ থেকে সে সময় সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ মার্কিন ডলার, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি, ৩০১ ভারতীয় রুপি এবং দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়।
পরে র্যাব সদস্যরা পাপিয়ার ফার্মগেটের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা ও কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড উদ্ধার করেন।
এসব ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪-এর অধীনে বিমানবন্দর থানায় আরও একটি মামলা করা হয়।
সব মিলিয়ে পাপিয়ার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে তিনটি মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য দুটির একটি অর্থ পাচার মামলা। গত ২৫ মে এ মামলায় পাপিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত। এর আগে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তাঁর স্বামীকে অস্ত্র মামলায় ২৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এনএনবাংলা/আরএম
আরও পড়ুন
আমার মন্ত্রণালয়ে ঘুষ খেলে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে ‘কবর দেওয়ার পরিকল্পনা’ করলো ইসরায়েল
রাজধানীতে একদিনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের ১৩ নেতাকর্মী গ্রেফতার