মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক তামান্না আক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক ও নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বরাবর। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রাজামেহার প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্সে মোট ৩৬ জন শিক্ষক রয়েছেন, যাদের মধ্যে মাত্র ৩ জন বাদে বাকিদের কোনো অভিযোগ নেই তামান্না আক্তারের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী শিক্ষকরা দাবি করেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সমাজসেবা অফিস ও দাতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুদান, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভাতা, এবং শিক্ষক নিয়োগে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেনে অনিয়ম হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, তামান্না আক্তার শিক্ষক নিয়োগে একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন, যেমন নিজের ননদ মোছাঃ আকলিমা আক্তার, দেবরের স্ত্রী মোছাঃ শারমিন আক্তার, এবং আরও দুটি পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি ও রেজুলেশনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়—২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে রেজুলেশন ও হাজিরা খাতার নামে অর্থ আদায় করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রতি জনের ৯ হাজার টাকার শিক্ষা ভাতার মধ্যে মাত্র ১ হাজার৫শ’ টাকা করে প্রদান করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে নিবন্ধন ও অনুদানের আশ্বাসে জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসারদের পরিদর্শনের নামে জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে।


সাংবাদিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে “নিবন্ধন করিয়ে দেওয়া”র নামে আরও ৩০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। নতুন সদস্য তালিকাভুক্তির সময় জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে গ্রহণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণ ও আসবাবপত্র কেনার অজুহাতে ১৫ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি বেতনভুক্ত করার প্রতিশ্রুতিতে জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে, যা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি অভিযোগকারীরা আরও জানান, শিক্ষক তালিকা প্রস্তুতের সময় অনেক পুরাতন শিক্ষককে বাদ দিয়ে নতুন তালিকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন তুললে তামান্না আক্তার জানান, “এমপি সাহেবের নির্দেশে নতুন তালিকা হয়েছে,”—এমন দাবি করে অভিযোগকারীদের হুমকি-ধমকি দেন তিনি। অভিযোগকারীরা হলেন: নূরজাহান, সুমি আক্তার ও রহিমা। অভিযোগকারীরা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে দ্রুত তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতিমুক্ত হয়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রকৃত সেবাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন
রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন ঘেরাও
কুমিল্লা থেকে ৪০ রুটে বাস ধর্মঘট, চরম ভোগান্তি
মুরাদনগরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও ইউপির চেয়ারম্যানসহ আটক-১০