December 18, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 14th, 2025, 6:26 pm

নতুন শিক্ষাবর্ষে স্বস্তির বার্তা, খুলনায় ১লা জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা পাবে বই

নতুন শিক্ষাবর্ষকে ঘিরে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান ঘটেছে। বই সংকট, পাঠদান ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা কিংবা শিক্ষকদের আন্দোলন। সবকিছু পেছনে ফেলে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে। শিক্ষা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে নতুন পাঠ্যপুস্তক। ফলে পুরোনো বা আগের বছরের বই দিয়ে পাঠদান চালানোর কোনো প্রয়োজন পড়বে না।

খুলনা মহানগরী ও জেলার নয়টি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২ লাখ ৯শ’ শিক্ষার্থীর জন্য বই প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের হিসাবে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট বইয়ের চাহিদা ছিল ৮ লাখ ৭১ হাজার কপি। এর মধ্যে ইতোমধ্যেই ৬ লাখ ৭ হাজার বই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। প্রাক-প্রাথমিক ও দ্বিতীয় শ্রেণির সব বই উপজেলা গুদামে মজুদ রয়েছে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ৩১ শতাংশ বই এখনও সরবরাহের অপেক্ষায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ আশাবাদী আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যেই সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে এবং ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যালয়গুলোতে বিতরণ সম্পন্ন হবে।

প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যক্রমে রয়েছে শিক্ষার্থীদের পরিচিত ও প্রয়োজনীয় বইগুলো, আমার বাংলা বই, ইংলিশ ফর টুডে, প্রাথমিক গণিত, প্রাথমিক বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইসলাম শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম শিক্ষা, বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা ও খ্রিষ্ট ধর্ম শিক্ষা। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৩৩টি পাঠ্যপুস্তক দিয়ে সাজানো হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যসূচি।

বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছিলেন, নতুন পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। জানুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীরা সব বই হাতে পাবে। এবার কোনো উৎসব বা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সরাসরি বিদ্যালয়ে বই পৌঁছে দেওয়া হবে। যাতে সময় নষ্ট না হয় এবং পাঠদান দ্রুত শুরু করা যায়। তিনি শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, যারা নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষাদান করছেন। তাদের প্রতি সরকারের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে এবং ন্যায্য দাবিতে সরকার সবসময় পাশে থাকবে।

শিক্ষাবর্ষের পরিকল্পনায় আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো ছুটির তালিকা। আগামী শিক্ষাবর্ষে মোট ১৪ দিন ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঐতিহাসিক ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবসকে ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের ইতিহাস সচেতন করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কোনো কারণ নেই। ২০২৫ সালের পাঠ্যপুস্তকে পাঠদান করা হবে না। শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই নতুন বই নিয়ে পাঠদান শুরু হবে। তাঁর এই আশ্বাস শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে নতুন করে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।

সব মিলিয়ে, বই সংকট ও অনিশ্চয়তার অধ্যায় পেরিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরছে স্থিতিশীলতা। নির্ধারিত সময়েই বই সরবরাহ এবং পাঠদান শুরুর এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের শেখার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করবে। এমন প্রত্যাশাই এখন সবার।