রংপুর ব্যুরো:
নথিপত্র উদ্ধারের নামে রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী’র স্বামীর বাড়িতে হয়রানিমূলক সার্চ ওয়ারেন্ট বাস্তবায়নের অভিযোগ উঠেছে সমাজসেবা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে। রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ স্বামী বাড়িতে বৃদ্ধা শ^াশুড়ি, দেবর, ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন মেরিনা লাভলী। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশে মেরিনা লাভলী’র স্বামীর বাড়িতে প্রেসক্লাবের নথিপত্র উদ্ধারে তল্লাশী চালায় রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসি আতাউর রহমান, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুল্লাহসহ পুলিশের একটি দল। প্রায় দুই ঘন্টা অবস্থান করে তারা কিছু না পেয়ে চলে যান। এদিকে নথিপত্র উদ্ধারের নামে হয়রানির ঘটনায় দুপুরে নগরীর সেন্ট্রাল কনভেনশন হলে সংবাদ সম্মেলন করেন, প্রেসক্লাবের মামলা পরিচালানাকারী আইনজীবী জোবাইদুল ইসলাম, মোকছেদ বাহলুল, রুবাইয়া সুলতানা পপি ও জহুরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবীরা জানান, প্রেসক্লাব দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে। কিন্তু একটি মহলের ইন্ধনে সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধনের জেরে অবৈধভাবে প্রশাসক নিয়োগ করে প্রেসক্লাব দখল করেছে। সেই সাথে প্রেসক্লাবে সকল সদস্যদের প্রেসক্লাবে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যূত্থানের পর প্রশাসন কেন প্রেসক্লাব দখলে নিবে এ প্রশ্ন সচেতন নাগরিকদের মনে। প্রেসক্লাবে পতিত, ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকদের দূর্নীতি, নির্যাতন, অপশাসনের গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় নথি রয়েছে, বিভিন্ন অভিযোগের ডকুমেন্ট, পেনড্রাইভ রয়েছে। শহীদ আবু সাঈদসহ জুলাই বিপ্লবের নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিল। এগুলো বিনষ্ট করতে একটি গোষ্ঠি কাজ করছে। ফলে প্রেসক্লাব দখলের মাধ্যমে কাকে সুবিধা দেয়া হচ্ছে সেটি খতিয়ে দেখতে হবে।
আইনজীবীরা বলেন, আজ এডিএম কোর্টের মাধ্যমে সমাজসেবা সার্চ ওয়ারেন্ট বাস্তবায়ন করেছে। গত ৮ মাস আগে সমাজসেবা অধিদপ্তর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রেসক্লাবের প্রশাসকের হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। প্রশাসক রংপুর প্রেসক্লাব নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রেসক্লাবের সমস্ত নথিপত্র, কাগজপত্রাদি, হিসাব-নিকাশ প্রেসক্লাবেই সংরক্ষিত ছিল। প্রশাসকের মাধ্যমে সদস্য অর্ন্তভূক্তি কার্যক্রমে বিজ্ঞ আদালত পরপর দু’বার নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়ার পরও জেলা প্রশাসনের অধিনস্ত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে এমন সার্চ ওয়ারেন্ট বাস্তবায়ন করে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে কেন হয়রানি করা হলো তা সবারই জানা। চব্বিশের গণঅভূত্থানের পর গণমাধ্যম কর্মীদের উপর এমন হয়রানিমূলক কার্যক্রম এ জাতির জন্য লজ্জার। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হবে।
আইনজীবীরা আরও বলেন, জুলাইযোদ্ধা হিসেবে সাংবাদিকদের অবদান অনেক। অথচ আজ সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করছে আমলারা। আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে, রংপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দিনাজপুরের কাহারোলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তৎকালীন সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ফ্যাস্টিস্ট সরকারের প্রার্থী মনোরঞ্জনশীল গোপালকে জয়ী হতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন। এসব বিষয় দ্রুতই গণমাধ্যমের সামনে আনা হবে। এ সময় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলীসহ প্রেসক্লাবের সদস্য ও অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুর রহমান মিন্টু
রংপুর ব্যুরো চীফ
আরও পড়ুন
ন্যায্য অধিকার দাবীতে বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা সমবায় সমিতির মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ
পাইকগাছার ৪০ টি প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত
বাবুগঞ্জ-লাকুটিয়া সড়ক সংস্কারে একমাসের আল্টিমেটাম : অন্যথায় দাবী আদায়ে ঘেরাও কর্মসূচি