অনলাইন ডেস্ক :
ভারত সরকারের চ্যালেঞ্জ এবং কূটনৈতিক সহায়তার অভাবে নয়া দিল্লিতে আফগান দূতাবাস স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে আফগান কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাবুল সরকারকে ভারতের স্বীকৃতি না দেওয়ার কারণে দূতাবাসের কার্যক্রম ১ অক্টোবর থেকে বন্ধ করার পদক্ষেপের পর বৃহস্পতিবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। সে সময় বলা হয়, তারা আফগান নাগরিকদের জরুরি কনস্যুলার সেবা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘নয়াদিল্লিতে ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তানের দূতাবাসের স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ভারত সরকারের অবস্থান অনুকূলভাবে বিকশিত হবে এই প্রত্যাশা থেকেই পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’
কিন্তু আট সপ্তাহের মধ্যে দূতাবাসটি ‘নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়ার জন্য তালেবান এবং ভারত সরকারের উভয়ের ক্রমাগত চাপের কারণে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়।’
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসা তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। দুই বছর আগে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগে কাবুল থেকে নিজেদের কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছিল দেশটি। তখন থেকে আফগানিস্তানে কূটনৈতিক উপস্থিতি নেই ভারতের। তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা জাতিসংঘের নেতৃত্ব অনুসরণ করবে বলে জানিয়েছে ভারত।
নয়া দিল্লিতে আফগান দূতাবাসটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সরকার নিযুক্ত কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হত।
শুক্রবার দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আফগান প্রজাতন্ত্রের কোনো কূটনীতিক ভারতে নেই এবং যারা দূতাবাসে কাজ করেছেন তারা নিরাপদে তৃতীয় দেশে পৌঁছেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতে উপস্থিত একমাত্র ব্যক্তিরা হলেন তালেবানের সঙ্গে যুক্ত কূটনীতিক,’ মিশনটি ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মিশনের ভাগ্য নির্ধারণ করা এখন ভারত সরকারের ওপর নির্ভর করছে, এটি বন্ধ রাখা হবে নাকি তালেবানের ‘কূটনীতিকদের’ কাছে হস্তান্তরের সম্ভাবনাসহ বিকল্পগুলোও বিবেচনা করা হবে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বলছে, ভারতে নিবন্ধিত প্রায় ৪০ হাজার শরণার্থীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আফগান নাগরিক। যারা অন্যান্য সংস্থার নিবন্ধিতদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
আফগান দূতাবাস জানিয়েছে, গত দুই বছরে শরণার্থী, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্যরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় ভারতে কমিউনিটি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টের পর থেকে এই সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং এই সময়ের মধ্যে খুব সীমিত ভিসা ইস্যু করা হয়েছে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
২০২২ সালে ভারত গম, ওষুধ, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং শীতবস্ত্র সহ আফগানিস্তানে ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছিল। যা ইতোমধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান অর্থনীতিতে ঘাটতি মেটাতে সহায়তা করেছিল।
আরও পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৭৭
হাসিনার মতো ‘বিশ্বস্ত মিত্র’কে হারানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে ৩৮ জনের মৃত্যু, আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় শোক পালন