January 7, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, January 5th, 2025, 7:11 pm

নারী লীগের জন্য পুল ভাবনা, ক্লাবগুলোর দাবি মাসে দশ লাখ টাকা

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল দক্ষিণ এশিয়ায় টানা দুই বার চ্যাম্পিয়ন। সেই দেশের নারী ঘরোয়া লিগ একেবারে দুর্বল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাফুফে নারী লিগের মান উন্নয়ন নিয়ে আজ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটি ক্লাবের পাশাপাশি গত নারী লিগে অংশ নেয়া দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক বসেছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বৈঠক শেষে বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ গণমাধ্যমে বলেন,‘ ক্লাবগুলোর আলোচনার প্রেক্ষিতে খেলোয়াড়দের পুল করার বিষয়টি এসেছে। এতে দলগুলো প্রায় সমশক্তির এবং প্রতিদ্বন্দ্বীতার মান বাড়বে।’

বাংলাদেশের ফুটবল সংস্কৃতিতে পুল অবশ্য নেতিবাচক ধারণা। নব্বইয়ের দশকে পুরুষ ফুটবলে পুল প্রথায় অনেক তারকা ফুটবলার প্রাপ্য সম্মানি পাননি। আবার অনেকে দলও পাননি এমন ঘটনাও ঘটেছে। নারীদের ক্ষেত্রেও সেই রকম হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। এই প্রসঙ্গে নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুল হলেও ফুটবলাররা যেন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেই বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে।’

নারী লিগ এক-দেড় মাসের মধ্যেই শেষ হয়। খেলোয়াড়রা মাত্র ৭-৮টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতেন। ফিফার নির্দেশনায় আসন্ন লিগের কলেবর বাড়াতে চায় বাফুফে, ‘ফিফার স্বীকৃতি পেতে হলে লিগের দৈর্ঘ্য ছয় মাস এবং ৯০ ম্যাচ হতে হবে। ক্লাবগুলোকে বিষয়টি বলা হয়েছে। ক্লাবগুলো এজন্য ফেডারেশনের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছে। বিষয়টি সভাপতি ও মার্কেটিং কমিটির সঙ্গে আমি আলোচনা করব’ বলেন কিরণ।

তীব্র গরমে স্থগিত নারী ফুটবল লিগ

ফিফার নির্দেশনায় লিগ হলে বাফুফে সামান্য কিছু আর্থিক অনুদান পাবে। সেই অনুদান একটি ক্লাবের ব্যয় হবে সর্বোচ্চ। তাহলে ফিফার নির্দেশনা অনুসরণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও নারী উইংয়ের প্রধানের বক্তব্য, ‘ফুটবলে উন্নতি করতে হলে ফিফার নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। ’

পুরুষ ফুটবলারদের ক্যাম্প যত্রতত্র হলেও নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প অনেকটা সংবেদনশীল। অনেক ক্লাবেরই নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা নেই আবার থাকলেও সেটা নারীদের উপযোগী নয়। ছয় মাসের লিগ,আবাসন ব্যবস্থা সামগ্রিক বিষয়ের জন্য ক্লাবগুলো ফেডারেশনের কাছে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা করে সাহায্য চেয়েছে, ‘একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে দশ লাখ টাকা ফেডারেশনকে অনুদান দেয়ার প্রস্তাব এসেছে। অন্য ক্লাবগুলোও এতে সায় রয়েছে। আর্থিক সহায়তা না পেলে দীর্ঘমেয়াদী লিগ খেলা সম্ভবপর নয়’ বলেন ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির কর্মকর্তা হাজী টিপু সুলতান।

ফেডারেশনের আর্থিক সক্ষমতা দুর্বল। প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ক্লাবগুলোর অংশগ্রহণ ফি, প্রাইজমানি থাকে বকেয়া। সেখানে নারী লিগের ক্লাবগুলোকে প্রতি মাসে দশ লাখ করে প্রদানের দাবি অনেকটাই অবাস্তবায়নযোগ্য।

আজকের মত বিনিময় সভায় প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর মধ্যে ব্রাদার্স ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম আবাহনী, বাংলাদেশ পুলিশ ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি উপস্থিত ছিল। দেশের অন্যতম শীর্ষ ক্লাব বসুন্ধরা কিংস, আবাহনী, মোহামেডান আসেনি। পেশাদার লিগের ক্লাবগুলোকে সভার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলেও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান এই বিষয়ে অবগত নন।

এ নিয়ে প্রশ্ন হলে কিরণের যুক্তি ছিল, ‘আমি দেশের শীর্ষ দশটি ক্লাবকে ডেকেছি। কোনো কমিটির অধীনে ক্লাবকে ডাকা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ ক্লাবগুলোর এখতিয়ার বা স্বাধীনতা কোন খেলা খেলবে কি খেলবে না। ’ কিরণ এমন মন্তব্য করলেও সাধারণ সম্পাদকের চিঠিতে স্পষ্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবলের লিগের অংশগ্রহণকারী সকল ক্লাবের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। মোহামেডান ক্লাবের দাবি, তারা নারী দল গঠনের আগ্রহী হলেও আজকের সভায় কোনো চিঠি পায়নি।

গত লিগে অংশ নেয়া এবং প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব প্রতিনিধি মিলিয়ে আজকের সভায় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল দশের বেশি। ক্লাবগুলোর অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের সময়সীমা এবং খেলা শুরুর সম্ভাব্য সময় নিয়ে নারী উইংয়ের প্রধান বলেন, ‘আজকের আলোচনার প্রাপ্ত তথ্য আমি সভাপতিকে অবহিত করব। এরপর তাদের নিয়ে আরেকটি সভা করব। তখন লিগের সময়সূচি ও অংশগ্রহণকারীর ক্লাবগুলোরও একটি ডেডলাইন বলা যাবে। যারা অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী তাদের নির্দিষ্ট শর্তপূরণ করেই আসতে হবে।’