October 7, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, December 12th, 2023, 9:48 pm

নির্দেশনা সত্ত্বেও আইপি ক্যামেরা স্থাপন করেনি চট্টগ্রামের বিপুলসংখ্যক শিল্প-কারখানা

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামে শিল্পবর্জ্য দূষণ প্রতিরোধ এবং কারখানা মনিটর করার জন্য আইপি ক্যামেরা (ইন্টারনেট প্রটোকল ক্যামেরা) স্থাপনে ২০১৯ সালে নির্দেশনা দিয়েছে। তবে গত চার বছরেও মাত্র অর্ধশত কারখানায় আইপি ক্যামেরা স্থাপিত হয়েছে। এখনো শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেনি আইপি ক্যামেরা। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর এবার ক্যামেরা স্থাপন না করা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে কঠোর হচ্ছে। কোনো কারখানা তাদের নির্দেশনা না মানলে নবায়ন ছাড়পত্র দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সংস্থাটি। আর উদ্যোক্তারা সরকারি নির্দেশনা মানতে আইপি ক্যামেরা স্থাপনে আরো সময় চান। পরিবেশ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ২৭৩টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র আছে। এর মধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের ইটিপি প্রয়োজন নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪১টি সিইটিপির সঙ্গে যুক্ত। আলাদাভাবে ১৩২ প্রতিষ্ঠানের ইটিপি থাকায় তাদের নিয়মিত মনিটর করে পরিবেশ অধিদপ্তর। ওই ১৩২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে মাত্র ৪০টি শিল্প-কারখানায় এখন পর্যন্ত নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আইপি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। এছাড়া আরো প্রায় ১০টির মতো প্রতিষ্ঠান আইপি ক্যামেরা লাগানোর অনুমতি নিতে আবেদন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে।

আর চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের মহানগর বাদে জেলা পর্যায়ের স্থাপনকৃত কারখানাগুলোয় আইপি ক্যামেরা স্থাপন করতে পেরেছে মাত্র ১০টি প্রতিষ্ঠান। জেলায় কারখানার সংখ্যা আছে দেড় শতাধিক। যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ইটিপি স্থাপন বাধ্যতামূলক, ওসব প্রতিষ্ঠানে আইপি ক্যামেরা স্থাপন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, শিল্প-কারখানাগুলো নিয়মিতভাবে পরিচালনা করার সময়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিশোধনে ইটিপি বন্ধ রাখে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযানে গেলে বেশির ভাগ সময়ে তারা আগেভাগে খবর পেয়ে ইটিপি চালু রাখে।

অনেকে হাতেনাতে ধরতে পারে এবং তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা বা মামলাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তবে এখন প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের একটি নির্দেশনা আসায় কাজ অনেকটা কমে গেছে। এখন যেসব কারখানায় ইটিপি আছে, সেখানে তারা উন্নত প্রযুক্তির আইপি ক্যামেরা স্থাপন করবে। সেই আইপি ক্যামেরা ইন্টারনেটের সার্ভারের সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরে কানেক্ট থাকবে। তারা সেই আইপি ক্যামেরাগুলোর আইডি ও পাসওয়ার্ড অধিদপ্তরের কাছে জমা দেবে। সেখান থেকে আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কারখানার কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করা হবে।

সূত্র আরো জানায়, আইপি ক্যামেরা বাসানোর জন্য যেসব প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা সংবলিত চিঠি দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে যারা এখনো ক্যামেরা স্থাপন করেননি তাদের নবায়ন ছাড়পত্র দেয়া বন্ধ রেখেছে পরিবেশ অধিদপ্তর মহানগর কার্যালয়। অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নবায়ন আটকে রেখেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে শিল্পোদ্যোক্তারা আরো সময় চেয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে। ছাড়পত্র নবায়নে ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সেজন্য যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা ইটিপি চালানো হয়, সেখানে ক্যামেরা লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

তবে অনেক সময় ক্যামেরা লাগালেও সফটওয়্যারের জটিলতার কারণে ডিডিও ফুটেজ পরিষ্কার না হওয়ায় সেটা বাতিল করা হয়েছে। এদিকে আইপি ক্যামেরার কারিগরি বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক জানান, আইপি ক্যামেরা স্থাপন পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো প্রকল্প নয়। প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী কারখানাগুলোয় এ ক্যামেরা বসানোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

মূলত এ ক্যামেরা বসিয়ে কারখানাগুলোকে মনিটর করাই অধিদপ্তরের কাজ। তবে একসঙ্গে মনিটর করার জন্য একটি সেন্ট্রাল অ্যাপসের তৈরি করা হলে যেকোনো জায়গা থেকে বসে কারখানাগুলোর কার্যক্রম মনিটর করা সম্ভব হবে। নয়তো একেকটি আইপি ক্যামেরার সফটওয়্যার আলাদা হওয়ায় সেগুলো একসঙ্গে মনিটর করা কষ্টসাধ্য। তবে মন্ত্রণালয় বিষয়টি সমাধানে কাজ করছে।

অন্যদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (মেট্রো) হিল্লোল বিশ্বাস জানান, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোয় আইপি ক্যামেরা দ্রুত লাগানোর জন্য নোটিস বা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা এ নির্দেশনা মানবে না তাদের কোনো ছাড়পত্র নবায়ন সনদ দেবে না পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে যারা নির্দেশনা অনুযায়ী আইপি ক্যামেরা লাগানোর জন্য পরামর্শ নিচ্ছেন তাদের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর সব ধরনের সহায়তা করছে।