নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিজয় সরণি মোড়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের ছিনতাই হওয়া ফোনটি অবশেষে উদ্ধার হয়েছে। ফোন ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, আমার বিশ্বাস ছিল ফোনটা পাওয়া যাবে। ফোনটি আমি ফিরে পেয়েছি। এজন্য পুলিশ বাহিনীকে ধনব্যাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা চমৎকার কাজ করেছেন। তার ফলেই আমি ফোনটি ফিরে পেয়েছি। সোমবার (১৯ জুলাই) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনীর কাজে আমি মুগ্ধ ও খুশি। দুই মাস পর ফোন পেলাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমার বিশ্বাসটা রক্ষা করেছে। এজন্য অনেক ধন্যবাদ। আমার চেয়ে আমার ফোনটাই বেশি জনপ্রিয় হয়েছে।
যেভাবে উদ্ধার হয় পরিকল্পনামন্ত্রীর ফোন: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মোবাইল ছিনতাইয়ের পর চারবার হাত বদল হয়। প্রত্যেকেই কেনার পর যখন বুঝতে পারে মোবাইলটি পরিকল্পনামন্ত্রীর তখন তারা বিক্রি করে দেয়। অবশেষে দেড় মাসের বেশি সময় পর মন্ত্রীর ফোনটি উদ্ধার করা হলো। অন্য একটি মামলার তদন্তের সূত্র ধরে পরিকল্পনামন্ত্রীর মোবাইলটি উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির রমনা বিভাগ পুলিশ। পুলিশ বলছে, জীবন নামে এক চোরাই মোবাইল কারবারিকে গ্রেফতার করে রমনা বিভাগ পুলিশ। মূলত তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পুরো চক্রটি ধরা পড়ে ও মোবাইলটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পুলিশের দাবি, জীবন মোবাইলটি পেয়েছে আরিফ নামে একজনের কাছ থেকে। আরিফ মন্ত্রীর মোবাইলটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আনলক করে জীবনের কাছে বিক্রি করে। আরিফ ফোনটি নিয়েছিল জাকির নামে একজনের কাছ থেকে। জাকির পেয়েছে সগির আর সুমনের কাছ থেকে। সগির আর সুমনই মোবাইলটি ছিনতাই করেছিল বলে দাবি পুলিশের। সোমবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান। তিনি বলেন, গত রোববার ধারাবাহিক অভিযানের একপর্যায়ে ধানমন্ডি থানার আরেকটি ছিনতাই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলো- মো. সগির, মো. সুমন মিয়া, মো. জাকির, হামিদ আহম্মেদ সোহাগ ওরফে আরিফ ও মো. জীবন। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল, বিভিন্ন মডেলের ১০টি ফোন, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, এক ভুক্তভোগী গত ১২ জুলাই ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ওই দিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা দুজন তার ভ্যানিটি ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যায়। ওই মামলার তদন্তকালীন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সগির ও সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য আসামিদের গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের হেফাজত থেকে মামলার বাদীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সগির ও সুমন মিয়ার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়। জাকিরই জানায় সে আরিফের কাছে মোবাইলটি বিক্রি করেছিল। আরিফ টেকনোলজিতে এক্সপার্ট। সে সফটওয়্যারের মাধ্যমে লক করা মোবাইল আনলক বা যে কোনো মোবাইল ব্যবহারের উপযোগী করতে পারে। তার কাছ থেকে টার্গেটকৃত ভিকটিমের মোবাইল উদ্ধার করা হয়। তার কাছে থাকা ল্যাপটপ যাচাইকালে পরিকল্পনামন্ত্রীর ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনের ছবি দেখতে পাই। সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরিফ জীবনের ঠিকানা দেয়। জীবনের কাছ থেকে মন্ত্রীর মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। ডিসি সাজ্জাদুর আরও বলেন, মন্ত্রীর ছিনতাই হওয়া মোবাইলটি আইফোন। আইফোনের লক খোলা খুবই কঠিন। আরিফই মোবাইলটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আনলক করেছিল। আনলক অবস্থায়ই আমরা মোবাইলটি উদ্ধার করতে সক্ষম হই।
আরও পড়ুন
আগামী বিজয় দিবস গণহত্যাকারীর শাস্তির রায়ে উদ্যাপন হবে: আসিফ নজরুল
কাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ শুরু: উপদেষ্টা
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি