আল ইব্রাহিম, শ্রীমঙ্গল,প্রতিনিধি:
‘পলো বাওয়া উৎসব’ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। মাছ শিকার এর জন্য এক সময় হাওর কিংবা বিলে পলো’র গুরুত্ব থাকলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় যা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরে শুরু হয়েছে গ্রাম বাংলার অন্যতম উৎসব পলো দিয়ে মাছ ধরা। এই আনন্দে শামিল হতে হাইল হাওরের পানিতে নেমে শত শত লোকজন পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসবে মিলিত হয়েছেন। শ্রীমঙ্গল উপজলোর ভূনবরি ইউনিয়নের হাইল হাওর এলাকার চরিখাল, ভাদালী খাল, গরুর দাড়া,গোপলা নদী, ছিরাবাদ আলী,জৈয়তার ট্যাক,ডুমের বিল, ডরি ডুভা, পাইতড়া বিল,কোদালি পাড় বিল ,আগড়ুরা বিল,এলাকায় চলছে পলো বাওয়া উৎসব। প্রতিবছর অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে চৈত্র মাস পর্যন্ত চলে পলো বাওয়া উৎসব। প্রতি সপ্তাহরে বৃহস্পতিবারে চলে এ উৎসব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল হাইল হাওরের ভূনবীর এলাকার জৈয়তার ট্যাক গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে শত শত লোক এসেছেন পলো নিয়ে মাছ ধরতে। দল বেঁধে মাছ ধরার দৃশ্যটি ছিল সবার কাছে উপভোগ্য। মাথা ও কোমরে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরতে দেখা যায় তাদের। কারো পলোতে মাছ ধারা পরলেই প্রায়ই সবাই মিলে জোরেশোরে চিৎকার করে উঠেন তারা। হাওরে পলো দিয়ে বোয়াল, কাতলা, মাগুর, গাঘট ইত্যাদি মাছ ধরতে দেখা যায় তাদের।
পলো দিয়ে মাছ ধরতে আসা বাছিত মিয়া বলেন, পলো দিয়ে মাছ ধরা ঐতিহ্যবাহী একটি উৎসব। আমরা শীতের শুরু থেকে পলো নিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ হাইল হাওরে মাছ ধরতে আসি। অভাব অনটন ক্রমশই গ্রাস করে ফেলেছে চিরাচরিত এই গ্রামীণ উৎসবের অতীত ঐতিহ্যকে। এরপরও প্রতি বছরের শীত মৌসুমে সবাই মিলে অতীতের মতো মাছ ধরার উৎসব পালন করছি।
মাছ ধরতে আসা ফয়েজ মিয়া বলেন, আমরা এর আগেও এখানে পলো বাইতে এসেছিলাম, আজ এসেছি। আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব আমাদের বাপ-দাদারা বছরের পর বছর করে গেছেন। এখন আমরা সেটা ধরে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। হাওর খেকো লোকজন এই হাওরের কিছু অংশ লিজ নিয়ে পুরোটাই দখল করে রেখেছে। পলো নিয়ে মাছ ধরতে এলেই তারা আমাদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন। হাওর থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে হাওরকে ফিশারি মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। এই হাওরে একসময় অনেক মাছ মিলত।এখন এই অবৈধ দখলদারদের কারণে এই মাছগুলো প্রায় বিলুপ্তীর পথে।
আরও পড়ুন
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
অগ্নিকান্ডে মিঠাপুকুরের নয়ন একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ