May 5, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, May 5th, 2025, 5:19 pm

পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি পরিবহন শুরু হচ্ছে আজ

পতেঙ্গা পাম্পিং স্টেশনের এই সাদা পাইপ দিয়েই ডিপো থেকে পাইপলাইনে ডিজেল পাম্পিং করা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনে নেওয়া প্রকল্পের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। আজ থেকেই পাইপলাইনে তেল পরিবহন শুরু হচ্ছে।

সোমবার (৫ মে) বিকেলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) এবং সরকারের যুগ্মসচিব ড. এ কে এম আজাদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আগামী ৭ মে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে তেল পরিবহন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আজ থেকেই জ্বালানি তেল পরিবহন শুরু হচ্ছে। এটা পরীক্ষামূলক পরিবহন। আগামী সাত থেকে ১০ দিন এভাবে পরীক্ষামূলক পরিবহন চলবে। এর মধ্যে কিছু ভুল-ত্রুটি হবে, সেগুলো সংশোধন করে পাইপলাইনের উদ্বোধন করা হবে। তারপর মূলত পুরোদমে তেল পরিবহন শুরু হবে।

জ্বালানি তেল পরিবহনের এই পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে। একটি অংশ চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত। আরেকটি অংশ গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত।

পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের এই প্রকল্পটি ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে অনুমোদন পায়। শুরুতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু করতেই ২০২০ সাল লেগে যায়। পরে প্রথম দফায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় আবারও ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। বিপিসির এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকায়। বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে সরবরাহ করা হবে ২৭ লাখ টন ডিজেল। পাইপে পরিবহন শুরু হলে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

প্রকল্পের নথিতে বলা হয়েছে, প্রতিবছর প্রকল্প থেকে ৩২৬ কোটি টাকা আয় হবে। পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ, ফুয়েল, বিদ্যুৎ বিল, জমির ভাড়াসহ আরও কিছু খাতে ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। এতে প্রতিবছর সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা। আগামী ১৬ বছরের মধ্যে প্রকল্পের বিনিয়োগ উঠে আসবে।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা বছরে ৬৫ লাখ টন। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরবরাহ করা হয়েছে ৬৭ লাখ টন। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশই ডিজেল। ঢাকা বিভাগেই জ্বালানি তেলের ব্যবহার মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ। বর্তমানে ঢাকায় তেল পরিবহনের জন্য প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় তেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনে ব্যবহৃত হয় প্রতি মাসে প্রায় ১৫০টি ছোট-বড় জাহাজ। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে। খরচ আর ভোগান্তি কমাতেই এই পাইপলাইন তৈরি করা হয়েছে।