অনলাইন ডেস্ক :
থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের জলসীমায় প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা পানি ও খাবার ছাড়া সাগরে নৌকায় ভাসছে বেশ কয়েক দিন। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকজন রাজনীতিক সাগরে ভাসমান এই রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাদ্যম দ্য কুইন্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মালাক্কা প্রণালী এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারতীয় জলসীমায় রোহিঙ্গাবাহী নৌকাটি অবস্থান করছে। এতে নারী ও শিশুসহ শতাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌকাটির ক্যাপ্টেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে অবস্থান করা মোহাম্মদ খান রেজুয়ানকে রোববার ফোনে বলেছেন, ‘আমরা মারা যাচ্ছি’। রেজুয়ান ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, পানিশূন্যতা ও অনাহারে ইতোমধ্যে নৌকায় থাকা তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি খুব খারাপ। তাদের পানি বা খাবার নেই। ডিসেম্বরের শুরুতে নৌকায় থাকা রোহিঙ্গাদের কথা তুলে ধরে জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা। ওই সময় সংস্থাটি বলেছিল, সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার উপযুক্ত নয় এমন নৌকাটিতে প্রায় ২০০ মানুষ থাকতে পারে। যদিও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই সংখ্যা প্রায় ১৬০ বলা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের আইনপ্রণেতারা মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) অ্যাসোসিয়েশন ফর সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশন্স (আসিয়ান) এবং অঞ্চলটির অপর দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে এবং নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধার করার জন্য। আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ান্স ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) বিবৃতিতে বলেছে, পুরুষ, নারী ও শিশুতে পূর্ণ একটি নৌকা চরম বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ভাসতে দেওয়া হচ্ছে, এটি চরম হতাশার। এই মানুষগুলোকে অবজ্ঞা মানবতার প্রতি অপমান ছাড়া কিছু না। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাটি নভেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ার পর ১ ডিসেম্বর থেকে এটি সাগরে ভাসছে। ৮ ডিসেম্বর ১৫৪জন রোহিঙ্গবাহী একটি নৌকা থাইল্যান্ড উপকূল থেকে উদ্ধার করে ভিয়েতনামের তেল পরিষেবার একটি নৌযান। পরে তাদের মিয়ানমারের নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোববার শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ১০৪জন রোহিঙ্গাবাহী আরেকটি নৌকা উদ্ধার করেছে। এতে ৩৯ নারী ও ২৩ শিশু ছিল। লঙ্কান নৌবাহিনী বলেছে, নৌকাটি ছিল একটি ছোট্ট ট্রলার এবং মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পথে ইঞ্জিন জটিলতায় পড়ে।
আরও পড়ুন
হাসিনার মতো ‘বিশ্বস্ত মিত্র’কে হারানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে ৩৮ জনের মৃত্যু, আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় শোক পালন
বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষ বাড়ছে, কমছে ধনী দেশের সাহায্য