April 28, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, April 27th, 2025, 11:28 am

প্রবাসীর স্ত্রীর মামলায় ইউপি সদস্য খসরু জেলহাজতে

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: কুলাউড়ায় মারামারি ও শ্লীলতাহানির মামলায় কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খসরু মিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) মৌলভীবাজার আদালতে জামিন নিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত খসরু মিয়ার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শনিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আলিম।  কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামের বাসিন্দা কাতার প্রবাসী রুবেজ আহমেদ রুবেলের স্ত্রী দোলা খানম বাদী হয়ে গত ২২ এপ্রিল ইউপি সদস্য খসরু মিয়া (৪০) সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং-৩১) দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামীরা হলেন আমতৈল গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে ফখরুল ইসলাম (৪০), ইসমাইল আলীর ছেলে আনোয়ার (৪৫) ও ইউপি সদস্য খসরু মিয়ার স্ত্রী রাছনা বেগম (৩০)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল কাদিপুর ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে বাগাইরদারা রাস্তার পাশে কাতার প্রবাসী রুবেজ আহমদ রুবেলের মৌরসী সম্পত্তি, পারিবারিক কবরস্থানসহ ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে জোরপূর্বক মাটি কাটাচ্ছেন ইউপি সদস্য খসরু মিয়া। খবর পেয়ে প্রবাসী রুবেলের স্ত্রী দোলা খানম ঘটনাস্থলে গিয়ে এক্সকাভেটর চালককে মাটি কাটতে নিষেধ করেন। এসময় এক্সকাভেটর চালক বিষয়টি ইউপি সদস্য খসরু মিয়াকে জানালে খসরু মিয়াসহ মামলার বিবাদীরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিককে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন। তখন চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে প্রবাসীর স্ত্রী দোলা খানমকে না জানিয়ে তাদের ফসলি জমি ও পারিবারিক কবরস্থান থেকে মাটি কাটার বিষয়ে বিবাদীর কাছে জানতে চাইলে বিবাদী খসরু মিয়াসহ তার সহযোগিরা উত্তেজিত হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী দোলা খানমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। প্রতিবাদ করলে প্রবাসীর স্ত্রী দোলা খানমের ওপর অতর্কিত হামলা চালান ইউপি সদস্য খসরু মিয়া, তার স্ত্রী রাছনা বেগম, ফখরুল ইসলাম ও আনোয়ার। হামলায় গুরুতর আহত হন প্রবাসীর স্ত্রী দোলা এবং তাকে শ্লীলতাহানিও করেন ইউপি সদস্য খসরু মিয়া।

হামলার একপর্যায়ে বিবাদীরা প্রবাসীর স্ত্রীর গলায় ও নাকে থাকা প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহত দোলা খানমকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  মামলার বাদী প্রবাসীর স্ত্রী দোলা খানম বলেন, আমার স্বামী প্রবাসে থাকায় পারিবারিক ও সাংসারিক সবকিছু আমাকে দেখভাল করতে হয়। ঘটনার দিন আমার স্বামীর পারিবারিক কবরস্থানসহ ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে জোরপূর্বক মাটি কাটাচ্ছেন ইউপি সদস্য খসরু মিয়া গং। কারণ জানতে চাইলে আমার ওপর উল্টো হামলা করা হয়। বর্তমানে আমি খুবই নিরাপত্তাহীনতায় আছি। ইউপি সদস্য খসরু মিয়া প্রভাবশালী থাকায় তার বাহিনী কর্তৃক একের পর এক হুমকিতে বর্তমানে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

কুলাউড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আলীম বলেন, প্রবাসীর স্ত্রী দোলা খানম ইউপি সদস্য খসরু মিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আদালতে জামিন নিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত ইউপি সদস্য খসরু মিয়ার জামিন না মঞ্জুর  করে তাকে  জেলহাজতে প্রেরণ করেন। অন্যদিকে মামলার অন্য আসামী আনোয়ার ও ইউপি সদস্য খসরু মিয়ার স্ত্রী রাছনা বেগম জামিন নিয়েছেন। অন্য আসামী ফখরুল পলাতক তাকে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।