অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে, পাশাপাশি তা ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায়। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহতের প্রতিবাদে এবং ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিক্ষোভ থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। খবর আলজাজিরার। বিক্ষোভের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাতিল করা হয়েছে গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান। আবার কোথাও প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ভবনগুলো দখল করে রেখেছে।
দ্য সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কে শত শত শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে শিবির তৈরি করে অবস্থান নিয়েছে। এসব শিবিরে ‘বর্ণবাদীদের জন্য কোনো বিনিয়োগ নয়’ লেখা ব্যানারও টানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন শিক্ষার্থী গ্যাবি আওসে বলেন, ‘ফিলিস্তিনপন্থি যুব সমাবেশে লোকজনের উপস্থিতি দেখতে খুব ভালো লাগছে। তরুণ-তরুণীরারা কিছু করে দেখাচ্ছে যাতে ইসরায়েলি আধিপত্যবাদী শক্তির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্পর্ককে দায়বদ্ধতার আওতায় আনা যায়।’ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এসব বিক্ষোভ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃস্থানীয় লোকজনের সব উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। আবার পুলিশও বিক্ষোভ দমনে বেশ সহিংস আচরণ করছে।
বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকদেরও গায়ের জোরে গ্রেপ্তার করছে। শনিবার সকালে বোস্টনে দাঙ্গা পুলিশ নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে একটি শিবির উঠিয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অবজ্ঞাসূচক ‘বু’ শব্দ করার পাশাপাশি জোরে চিৎকার করতে থাকে। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে এ পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে সশস্ত্র পুলিশ। এদিকে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বিক্ষোভকে ‘ইহুদি-বিদ্বেষ’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিন্দা জানিয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা এই অভিযোগ বাতিল করে দিয়ে বলেছে, এসব বিক্ষোভে অনেক ইহুদি কর্মী-সমর্থকও যোগ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, গত সাত মাস ধরে চলতে থাকা গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। বার্লিনে পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে শিবির স্থাপন করেছে যুদ্ধবিরোধী কর্মীরা। তারা ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে জার্মান সরকারের প্রতি। প্যারিসের নামকরা সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটিতে মূল ভবনের বাইরে বিক্ষোভের কারণে কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ক্লাস নিতে বাধ্য হয়। সুইডেনেও শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ। বিক্ষোভে জনতা ‘ফিলিস্তিন মুক্ত কর’ এবং ‘ইসরায়েলকে বয়কট কর’ স্লোগান দেয়। এ ছাড়া শনিবার বিকেলে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে শত শত লোক জড়ো হন।
আরও পড়ুন
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর প্রথমবার জনসমক্ষে খামেনি
বিমানে ২০০ জনকে সীমান্তে আনলো ভারত, টার্গেট বাংলাদেশে ‘পুশইন’
নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের ঘোষণা ইলন মাস্কের