December 20, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, November 20th, 2025, 7:11 pm

ফুটবলার সমিত সোমকে বরণ করে নিলেন শ্রীমঙ্গলের ভক্তরা

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ও কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের নন্দিত তারকা ফুটবলার শমিত সোমকে হাজারও ভক্তরা তাকে বরণ করে নেয়। বুধবার সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে সমিত সোম তার বাড়িতে পৌঁছান। তাকে এক নজর দেখতে আগে থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা হাজারো ভক্তরা জড়ো হন সমিত সোমের বাড়িতে। ভারতের বিপক্ষে ২২ বছর পর বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম নায়ক শমিত সোম দেশে ফিরেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে জিতব, জিতেই নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে গর্বিত করার পর সকালে নিজ শহর শ্রীমঙ্গলে ফিরে আসেন তিনি। খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামের তরুণ-যুবক, নারী ও বয়োবৃদ্ধ সবাই দলে দলে ভিড় করেন দক্ষিণ উত্তরসুরে। কারও হাতে ফুল, কারও হাতে ব্যানার, আবার কেউ লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে দাঁড়ান প্রিয় তারকাকে স্বাগত জানাতে। বাড়ির আঙিনা থেকে আশপাশের সড়ক পর্যন্ত যেন উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নিজের শেকড়ের কথা স্মরণ করে শমিত সোম বলেন,আমার দাদু প্রয়াত মানিক লাল সোম ছিলেন ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং একজন ফুটবলার। এই পরিবারের শেকড় থেকেই আমার ফুটবলের সূচনা। আমার জেঠু বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহন লাল সোম রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীনে অবদান রেখেছেন। আমি সেই গর্বিত পরিবারের সন্তান। দেশের জার্সি গায়ে লাগিয়ে ভারতের বিপক্ষে জয় এনে দিতে পেরে আমার জীবনের অন্যতম বড় আনন্দ। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা মানস লাল সোম ও মা নন্দিতা সোম কানাডাতেই থাকেন। আজ নিজের বাড়িতে ফিরে শ্রীমঙ্গলের মানুষের যে ভালোবাসা পেলাম, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। যদিও বেশিদিন থাকতে পারছি না,কাল রাতেই কানাডা ফিরে যাব। তবে ২০২৬ সালের মার্চে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে অংশ নিতে আবার দেশে ফিরব।

ভক্তদের আবদারে সাড়া দিয়ে তিনি সেলফি তোলেন, স্বাক্ষর দেন, ফুল গ্রহণ করেন কাউকেই ফিরিয়ে দেননি। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, শ্রীমঙ্গলের মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, তা আমাকে আরও শক্তি দেয়, আরও ভালো খেলার প্রেরণা যোগায়। শমিতের আগমনকে ঘিরে দক্ষিণ উত্তরসুরে দুর্দান্ত উৎসবের আবহ নেমে আসে। মানুষের মুখে আনন্দ, গর্ব আর আবেগ, সব মিলিয়ে এক অসাধারণ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘসময় ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটানোর পর তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। স্থানীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব বৈকালী ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড় মিলন দাশগুপ্তসহ  অন্যান্য সাবেক  খেলোযাড়রা শমিত সোমকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান, এবং এসময় শমিত সোমকে তারা বলেন, তোমার দাদু আমাদেন স্যার  মানিক লাল সোম বৈখালী ক্লাবের একজন খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি তিনি খুবই ভাল ফুটবল খেলতেন। শ্রীমঙ্গলের সাবেক গোলকিপার  কাজী জাহেদ আহমেদ মনি বলেন,শমিত সোম শুধু শ্রীমঙ্গলের গর্ব নন, তিনি বাংলাদেশের অহংকার। ভারতের বিপক্ষে দেশের জন্য মাঠে নেমে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। শ্রীমঙ্গল  উপজেলার রেফারি সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক মো: আবুল কাশেম আশা প্রকাশ করেন, শমিত সোম ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মুখ আরও উজ্জ্বল করবেন। নিজ শেকড়ে ফিরে ভক্তদের অফুরন্ত ভালোবাসা পেয়ে শ্রীমঙ্গলবাসীর গর্ব যেন আরও বেড়ে উঠেছে। শমিত সোমের প্রতি মানুষের এই আবেগ আবারও প্রমাণ করল, তারকারা শুধু মাঠে জন্মায় না, জন্মায় মানুষের হৃদয়ে, মানুষের ভালোবাসায়।