অনলাইন ডেস্ক :
ফের দেবে গেছে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বর এলাকাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি স্থান। অথচ মাত্র মাসখানেক আগেই সড়কটি সংস্কার করা হয়। এ নিয়ে সড়কটি নির্মাণের পর অন্তত আট থেকে ১০ বার দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটলো। তবে বিকল্প কোনো পথ না থাকায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন এবং জনসাধারণকে এই মহাসড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, পাকা সড়কের নিচের অংশে নির্মাণ কাজে অনিয়ম ছিল। সেখানে এখনো নরম কাদা জমে আছে। সেজন্য বছরের না ঘুরতেই কয়েক দফায় দেবে যাচ্ছে সড়কের বিভিন্ন স্থান। এতে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, গোলচত্বর সংলগ্ন পশ্চিম ও উত্তর পাশের চার-পাঁচটি স্থানে সড়ক দেবে কয়েকটি সরু খাল ও ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
যানবাহন এমনকি পথচারীদেরও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে করে যে কোনো সময় যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ঝুঁকি এড়াতে যানবাহন চালকদের অনেকেই ট্রাফিক আইন অমান্য করে ভারী মালামাল নিয়ে উল্টোপথে চলছেন। কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বর ছাড়াও মহাসড়কের টোলপ্লাজা, আলাউদ্দিননগর, কাজীপাড়া মোড়, মোড়াগাছা এলাকারও কয়েকটি স্থানে দেবে গেছে। ভ্যানচালক আতর আলী বলেন, কিছুদিন আগেই এখানে মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু কয়দিন যেতে না যেতেই আবারও দেবে গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়ক দিয়ে চলাচলরত ইজিবাইকচালক সোলাইমান জানান, রাস্তায় জায়গায় জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় তার মতো অনেকেই আইন অমান্য করে উল্টোপথে চলছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে সংস্কারের কারণে বারবার দেবে যাচ্ছে সড়ক।
এতে একদিকে যেমন সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা অপচয় হচ্ছে। তেমনই সড়কের এ অবস্থার কারণে দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তারা দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি কমাতে এর স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান। কুমারখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম রফিক বলেন, বারবার সড়ক দেবে গিয়ে গোল চত্বর এলাকাটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। নির্মাণের পর থেকে প্রায় আট-দশবার একই স্থানে সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনি মনে করেন, কাজে অনিয়ম থাকায় নিচের অংশে পানি জমে থলথলে কাদা জমে গেছে। স্থায়ীভাবে সংস্কারের পাশাপাশি মহাসড়ক নির্মাণে যদি কোনো অনিয়ম থাকে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সেলিম আজাদ খাঁন জানান, প্রায় ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি নির্মাণ করেন মেহেরপুরের ঠিকাদার জহুরুল ইসলাম কনস্ট্রাকশন। ২০১৮ সালে সড়কটির পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। সড়কটি দেবে গেলে ২০২০ সালের জুন মাসে প্রথম সংস্কার কাজ শেষ করে ঠিকাদার। পরবর্তীতে ২০২১ সালে জুন মাসে দেবে যাওয়া অংশ সংস্কার করা হয়। ২০২২ সালে কয়েক বার একইস্থানে আবার সরু খাল ও গর্ত সৃষ্টি হলে তা সংস্কার করা হয়। গত ৪ মে সর্বশেষ সংস্কার কাজ করা হয়। তবে একই স্থানগুলো দেবে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বারবার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ দেবে যাওয়ার কারণ কী বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নে এই প্রকৌশলীর দাবি, মহাসড়কে অবৈধভাবে স্থানীয়দের উদ্যোগে স্পিডব্রেকার দেওয়া হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত বোঝায় যানবাহনগুলো হার্ডব্রেক করছে। আর এতেই বারবার সড়ক দেবে যাচ্ছে। এরইমধ্যে তিনিসহ সংশ্লিষ্টরা সড়কের দেবে যাওয়া স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে খুব দ্রুতই স্থায়ীভাবে এ সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।
আরও পড়ুন
শেরপুর ও ময়মনসিংহে আকস্মিক বন্যা, তলিয়ে গেছে ১৬৩ গ্রাম
আরও বেড়েছে ডিমের দাম, সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী
ময়মনসিংহে মোবাইল বিস্ফোরণে চিকিৎসকের মৃত্যু