বরিশাল ব্যুরো: পুলিশ ইন্সপেক্টর আবুল কালাম ঝালকাঠি শেকের হাট এলাকায় এক আতংকের নাম। ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝেননা তিনি। ঘুষ দিলেই মেলে মুশকিলের আছান। যিনি ঘুষ দেন তিনি অপরাধী হোক আর নিরাপরাধী হোক তার পক্ষেই অবস্থান নেন ঝালকাঠি জেলার শেখের হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল কালাম। টাকার বিনিময়ে বিবাদীদের পক্ষে জমি দখলে সহায়তা, মামলার তদন্তে গরিমসি, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, ইটবাটা, অবৈধ ড্রেজার থেকেও বেপরোয়া ঘুষবাণিজ্য, বাদীর পক্ষে চার্জসীট এনে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহন, ভয়ভীতির অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে নীরিহ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় সহ সবই করে থাকেন তিনি। অথচ ওই এলাকায় চুরি, মাদকের রমরমা বাণিজ্য, ইবটিজারদের বিরুদ্ধে কাজ করার ব্যাপারে উদাসীন ইন্সপেক্টর আবুল কালাম। সর্বশেষ শেখের হাটের শীমান্তকাঠি গ্রামের ফাতেমা নামে এক বিধবা নারীর দায়েরকৃত ধর্ষন চেষ্টা মামলার রিপের্ট পক্ষে এনে দেওয়ার কথা বলে প্রথম ধাপে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরবর্তীতে আরো ১০ হাজার টাকা দাবি করলে ইন্সপেক্টর আবুল কালামের বিরুদ্ধে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগি নারী। এলাকার ভুক্তভোগিরা জানান আবুল কালাম এলাকায় দীর্ঘদিন তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকায় অপরাধীদের কাছে তিনি সহজলভ্য হয়ে গেছেন। এখানে নতুন ইনচার্জ না দিলে সাধারণ মানুষ হয়রানী থেকে মুক্তি পাবে না। ভুক্তভোগি ফাতেমা বেগম জানান, এলাকার কিছু সন্ত্রাসীরা ধর্ষন চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তার উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় আদালতে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করতে আসেন ঝালকাঠি শেখের হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল কালাম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রফিকুল ইসলাম। তারা দুজনেই আমার পক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলে চাপ দিয়ে ১৫ হাজার টাকা নেন ইনচার্জ আবুল কালাম ও এসআই রফিকুল ইসলাম। এ ঘটনার কিছুদিন পর এস আই রফিকুল ইসলাম বদলি হয়ে গেলে মামলার তদন্ত রিপোর্টর বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আবার ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দিলে তদন্ত রিপোর্ট পাবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় ভুক্তভোগি নারীকে। উপায়ন্ত না পেয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির কাছে অভিগেযাগ করা হয়। এদিকে শেখের হাট এলাকার তৌহিদ নামে এক বাসিন্দা এ প্রতিবেদককে জানান, তার জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে কোর্ট। তারপরেও টাকা খেয়ে ইন্সপেক্টর আবুল কালাম বিবাদীদের জমি দখলে সহায়তা করেছেন। তিনি জানান, একজন ওসি পদমর্যাাদার পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস হচ্ছে না। তবে তাকে এখান থেকে সরিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দিলে হয়তো সমস্যার সমাধান হবে। ওই একই এলাকার মোমিন নামে এক বাসিন্দা এ প্রতিবেদককে জানান, তার একটি বিরোধী সম্পত্তি নিয়ে সালিশের ঘটনায় ইন্সপেক্টার আবুল কালাম তার সোর্সের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ঘুষ নেন। এ বিষয়ে ঝালকাঠি শেখের হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল কালাম এসব ঘটনা অস্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, “তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। ডিইজি ও এসপির সাথে আমার কথা হইছে। আপনারাও তদন্ত করে রিপোর্ট করেন”। বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মঞ্জুর মোর্শেদ আলম জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ভুক্তভোগি নারী ফাতেমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।
বরিশালে পুলিশ ইন্সপেক্টর আবুল কালামের ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ শেখের হাটবাসী, নতুন ওসি চাচ্ছে সাধারণ মানুষ

আরও পড়ুন
দেশে এই মুহুর্তে দরকার বিচার ও সংস্কার: নাহিদ ইসলাম
এসআই পরিচয়ে থানায় তরুণী, কনস্টেবলকে ভুলে ‘স্যার’ ডেকে ধরা
যৌন নির্যাতনের কারণে নিখোঁজের ২১ দিন পর কিশোরী রিতু পিবিআই হেফাজতে