২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় মৃতদেহটি সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল।
মৃত মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান মুনিয়ার ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার’ অভিযোগ করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে।
কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থের বিনিমিয়ে এ ‘ধর্ষণ ও হত্যা’ মামলা থেকে সায়েম সোবহান আনভীর ও তার পরিবারের সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)- এর মাধ্যমে।
দেশের প্রচলিত আইনকে মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পার পেয়ে গিয়েছিলেন বসুন্ধরা গ্রূপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম ও তার ছেলে সায়েম সোবহান আনভীর । যার নেপথ্যে ছিলেন গণহত্যাকারী, ভোট চোর শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় বাংলাদেশে। প্রহসনের বিচারে নিরবে নিভৃতে কেঁদেছেন মুনিয়ার পরিবার।

এবার মুনিয়ার মতো আরও এক নারীর সম্ভ্রমহানির অভিযোগ এসেছে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিবারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ইশরাত জাহান রিদিকা নামের এক তরুণীর ভিডিও।
তিনি দাবী করেছেন বসুন্ধরা গ্রূপের ভাইস চেয়ারম্যান সানভীর সোবহান তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক করেছে। বর্তমানে সে ১০ সপ্তাহের গর্ভবতী। কিন্তু সানভীর সোবহান তাদের অনাগত সন্তানকে অস্বীকার করছে। পাশাপাশি রিদিকাকে বিয়ের মতো সামাজিক মর্যাদা দিতেও টালবাহানা করছে।
ভিডিওতে ইশরাত জাহান রিদিকা নামের ওই তরুণী আরও অভিযোগ করছেন বসুন্ধরা গ্রূপের ভাইস চেয়ারম্যান সানভীর সোবহান নিয়মিত তাকে মারধর করেন। সানভীর তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেছে এবং ভিডিওতে তিনি আঘাতের চিহ্নও দেখিয়েছেন। রিদিকা নিজের ও তার অনাগত সন্তানের জীবন বিপন্ন মনে করছেন।প্রতিনিয়ত তিনি শারীরিকভাবে লাঞ্চিত এবং অপমানিত হচ্ছেন। একজন নারী হিসেবে তিনি এর প্রতিকার চেয়েছেন। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন।
ইশরাত জাহান রিদিকার ভিডিওর কমেন্ট বক্সে অনেকে মন্তব্য করেছেন। একজন নারী লেখেছেন, বসুন্ধরা গ্রূপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান, তার চার ছেলে তানভীর, আনভীর, সানভীর, তাসভীর এভাবে একরে পর এক মেয়েদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে, তাদের শারীরিক নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ব্যবহারের পর টিস্যু পেপারের মতো ছুঁড়ে ফেলে, যা এই পরিবারের পুরুষ সদস্যদের নোংরা ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এটা যেন চিরতরে বন্ধ হয়, সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। দেশের আইনে এদের লাম্পট্যের বিচার করতে হবে।
এদিকে সুন্ধরা গ্রূপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান, তার চার ছেলে তানভীর, আনভীর, সানভীর, তাসভীরের লাম্পট্য নিয়ে নিজের ফেসবুকে লেখেছেন জুলকারনাইন সায়ের খান ওরফে সামি। যিনি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে জনপ্রিয়। তিনি আল জাজিরা ইনভেস্টিগেটস কর্তৃক প্রচারিত অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান’ নিয়ে কাজ করে আলোচনায় আসেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইউটিউবার, ব্লগার ও মানবাধিকার কর্মী, নাগরিক টিভির নাজমুস সাকিবও একাধিকবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক: বাণিজ্য উপদেষ্টা
স্ত্রীসহ হানিফের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে : মির্জা ফখরুল