March 20, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, March 18th, 2025, 3:10 pm

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে তুলসী গ্যাবার্ডের অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছে ফাতিহা আয়াত

 

সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড যে অভিযোগ করেছেন তার প্রতিবাদ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন ১৪ বছর বয়সী ‘হিজাবিকন্যা’ ফাতিহা আয়াত।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়েম একটি পোস্ট দিয়েছেন।
পোস্টে ফাতিহা আয়াত লিখেছেন….

বৈশ্বিক গোয়েন্দাপ্রধানদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে নয়াদিল্লি এসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড আজ সোমবার এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে বলেন:

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দুর্ভাগ্যজনক নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য নির্যাতন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের উদ্বেগের একটি প্রধান ক্ষেত্র।

আমি জানি না বাংলাদেশ সরকার কোন বিদ্যমান কূটনীতি, বাইল্যাটারাল আলোচনা ফোরাম বা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কাঠামোয় এর আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ করবে কিনা। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে তা করলাম। আশা করি, আপনারা সবাই #শেয়ার করবেন।

তুলসী গ্যাবার্ড আমার সাথে LinkedIn-এ যুক্ত। সেখানে আমি তাকে সরাসরি আমার প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছি। আপনাদের জন্য বাংলায় তা এখানে তুলে ধরলাম:

প্রিয় পরিচালক গ্যাবার্ড,

আমি শ্রদ্ধার সাথে আপনার সাম্প্রতিক বিবৃতির বিষয়ে আমার উদ্বেগ প্রকাশ করতে লিখছি, যেখানে আপনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, হত্যা এবং নিপীড়ন অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। আপনার এই বক্তব্য সম্ভবত পুরনো বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে।

অতীতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও, এটি স্বীকার করা জরুরি যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি শান্তি ও স্থিতিশীলতার সময় নিশ্চিত করেছে, যেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কোনো বৃহৎ আকারের সহিংসতা বা ধারাবাহিক নিপীড়নের ঘটনা ঘটেনি। এই প্রশাসনের অধীনে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রয়েছে, এবং বাংলাদেশ তার বহু ধর্মের সহাবস্থান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশের সংবিধান সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করে এবং সরকার এই অধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের আইনগত কাঠামো নিশ্চিত করে যে সকল ধর্মের মানুষ নির্ভয়ে তাদের ধর্ম পালন করতে পারেন। এছাড়া, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে সকল নাগরিক—তাদের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে—নিরাপদ থাকেন।

সহিষ্ণুতা ও সহনশীলতার আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলে ধর্মীয় হামলার কোনো রেকর্ড নেই, এবং প্রশাসন সকল সম্প্রদায়ের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করছি যে, আপনি এই বিষয়ে প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে আপনার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করুন এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সাথে সরাসরি কাজ করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সংস্থাগুলোর সাথে গঠনমূলক সংলাপে যুক্ত হন। ভারসাম্যপূর্ণ ও তথ্যভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক বোঝাপড়াকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।

আপনার সময় ও মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আরও আলোচনার সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকলাম।