জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট আঞ্চলিক শাখা ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত নদীর অধিকার ও সিলেটের নদ-নদীর অবস্থা : প্রেক্ষিত সোনাই নদী শীর্ষক নাগরিক আলোচনা সভা মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরের পূর্বজিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট আঞ্চলিক শাখার সভাপতি জামিল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আবদুল করিম কিমের সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, বাপার সাথে সরকারের যে নীতি আইন কানুন বিধিবিধানে কোনো গড়মিল বা ফারাক নেই। বাপা যে কাজটি আন্দোলন করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করছে, সরকার সেটা আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে সেই একই কাজ করছে। বাপার মত সরকারের উদ্দেশ্য হাওর নদীকে রক্ষা করা। আজকের আলোচনায় সুরমা নদীর বিষয়ে বেশ কিছু কথা এসেছে আমরা সেগুলো দেখবো। সুরমা নদীর পাড়ে খুব বেশি ইন্ডাস্টিজ নেই তাই খুব একটা দূষণ হচ্ছে না। সুরমাতে যে বর্জ্য যায় সেটি প্রতিদিনের বাজার হাট বা গৃহস্থালির ময়লা। এটা সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। সুরমার উৎস মুখ পানি প্রবাহের উপযোগী নয়। তাই এই নদীকে ডেজিংয়ের মাধ্যমে খনন করা প্রয়োজন।
আলোচনায় অংশ নেন, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, বাপা সিলেটের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট সিলেটের সভাপতি ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, বাপা সিলেটের কোষাধ্যক্ষ ছামির মাহমুদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বাপা সিলেটের সদস্য ড. দিলারা রহমান, সহকারী অধ্যাপক অধ্যাপক মো. এমদাদুল হক, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন, উদীচী সিলেটের সভাপতি কবি এনায়েত হোসেন মানিক, তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে যাদু, সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ও বাপা সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই আল হাদি, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাপা সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুদীপ্ত অর্জুন ও গৌরাঙ্গ পাত্র, হাওর ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা, অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন, সাংবাদিক পীর জুবায়ের ও সাংস্কৃতিক কর্মী নিশাত সাদিয়া প্রমুখ।
“নদীর অধিকার ও সিলেটের নদ নদীর অবস্থা: প্রেক্ষিত সোনাই নদী শীর্ষক নাগরিক আলোচনা সভায় নদীর অধিকার এবং সিলেটের নদ-নদীঃ প্রেক্ষিত সোনাই নদী” শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে সোনাই নদীতে কিভাবে নদীর অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে তা তুলে ধরেন এস এম আরাফাত, সদস্য-সচিব, শিক্ষা, তথ্য এবং গবেষণা উপ-কমিটি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক শরীফ জামিল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট বিভাগীয় পানি উন্নয়ন অধিদফতরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম ও সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) শেখ মোহাম্মদ সেলিম।
বাপার সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, নদীর অধিকার এখন প্রকৃতির অধিকার হয়ে গেছে। আমাদের দেশ নদীর অধিকার হরণ করা হচ্ছে। নদীর অবাধ প্রবাহে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। নদীর নিজস্ব ভূমিরুপ হস্তক্ষেপ করাসহ নানা কাজ করে নদীর অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। তাই নদী নষ্ট হওয়ার কারণে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে। নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা ঘোষণা করার পরও মানুষ নদীর উপর অত্যচার করছে। আইন অনুযায়ী এসবের জন্য ফৌজদারী মামলাও করা যায়। কিন্তু মামলাও আমলে নেওয়া হয় না কারণ বিভিন্ন জায়গায় যারা নদী শাসন করছেন তারা সরকারে উচ্চ পর্যায়ের এমপি মন্ত্রী। দেশের বড় বড় শিল্পপতি।
অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল মুনির, ফকির মেলা ফাউন্ডেশন এর ফকির জাকির হোসেন সোহেল, উন্নয়ন কর্মী হাসান এ চৌধুরী, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের সদস্য মুজাহিদ হোসেন মুনিম, সাংবাদিক শাকিলা ববি প্রমুখ।
আরও পড়ুন
রংপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মহানগর ও জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন
র্যাব রংপুরে ৩৫১.৩৮ গ্রাম হেরোইন সহ স্বামী-স্ত্রী আটক করেছে
দুর্নীতির ফাইল নষ্ট করতেই সচিবালয়ে আগুন: রংপুরে রিজভী