বাবুগঞ্জ (বরিশাল), প্রতিনিধি: বরিশালের বাবুগঞ্জে খাবার পানির অভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি কম এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া গভীর- অগভীর নলকূপে উঠছে না পানি। পুকুর, খাল-বিল ও ডোবাগুলোতে পানি না থাকায় গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারসহ পশুপাখির পানির প্রকট সংকট দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের ঋতু পরিবর্তিত হচ্ছে, আর এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে নিরাপদ ও সুপেয় পানির ওপর। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের বেশ কিছু যায়গায় গভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তলন করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু নলকূপে কখনও পানি ওঠে কখনও ওঠে না। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অকেজো হয়ে পরা বেশিরভাগ গভীর নলকূপ সরকারিভাবে স্থাপন করা। ব্যাক্তিগত উদ্যোগে স্থাপন করা নলকূপ গুলোয় সন্তোষজনক পানি পাওয়া যাচ্ছে। ইউনিসেফের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০০১-২০১৮ সালে হওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে প্রায় ৭৪ শতাংশই পানি সম্পর্কিত, অর্থাৎ খরা (অনাবৃষ্টি) ও বন্যা (অতিবৃষ্টি)। আর এ কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের শিশুরা। অপর্যাপ্ত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনজনিত রোগে প্রতিদিন বিশ্বে প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে পাঁচ জন মৃত্যুবরণ করছে। ফলে এই বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) ‘সকলের জন্য পানি ও পয়োনিষ্কাশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করাকে ষষ্ঠ লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে। গত ৫ বছর যাবৎ খরা মৌসুমে বাবুগঞ্জের অনেক এলাকায় গভীর নলকূপে পানি না ওঠায় বিপাকে পরেছে ভুক্তভোগীরা। এদিকে একটি মহল মনে করছেন উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের পাংশা গ্রামে অমৃত কনজুমার ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড এর বোতলজাত “অমৃত পানি ” ভূগর্ভ থেকে উত্তলন করার কারনে ওই এলাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। অমৃত কনজুমার ফুড প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরির আশপাশের বাড়ীগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে প্রত্যেকটি গভীর নলকূপে পানি উঠছে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল এর বাড়ী সামনের পূর্ব পাংশা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গভীর নলকূপে পানি স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। অমৃত কনজুমার ফুড প্রোডাক্টসের প্রোডাকশন ম্যানেজার বিজয় কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, আমাদের অমৃত বোতলজাত পানি উৎপাদনের জন্য ভূ-মৃত্তিকা বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই দীর্ঘদিন যাবৎ জরিপ করে লাইসেন্স দিয়েছে। আমরা গত দেড় বছর যাবত অমৃত বোতলজাত পানি বাজারজাত করছি। বরিশালের অনেক যায়গায় এর আগেও গভীর নলকূপে খরা মৌসুমে পানি সংকট ছিলো। সুপেয় পানি সংকটের মূল কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জলাশয় ভরাট করে বাড়ি নির্মান। উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের বকশিরচর গ্রামের বাসিন্দা বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব এর সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের নলকূপে এতদিন পানি পাইনি। বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে পানি সংকট দূর হয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সুমন বলেন, খরা মৌসুম ও ভূগর্ভ থেকে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় বাবুগঞ্জে কিছু কিছু এলাকায় গভীর নলকূপে পানি উঠছে না। অন্যদিকে অতিরিক্ত খরার কারণে পুকুর, খাল ও ডোবাগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির সংকট হয়েছে।
বাবুগঞ্জে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ফলে খাবার পানির সংকট

আরও পড়ুন
আওয়ামীলীগের ঝটিকা মিছিল করায় প্রশাসনের নিরব ভূমিকার প্রতিবাদ করেছে নাগরিক পার্টি-এনসিপি
জয়পুরহাট পৌরসভার লিজকৃত দোকান সমূহের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
ঈশ্বরগঞ্জে ঘর হারানোর শঙ্কায় প্রতিবন্ধী নজরুল