October 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, May 16th, 2022, 7:23 pm

বাম্পার ফলনের আশা সোনারগাঁও লিচু চাষিদের

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার লিচু বাগান মালিকরা গত দুই বছর করোনাভাইরাস ও লিচু মৌসুমে রমজান মাস থাকায় লিচুর ফলন হলেও বিক্রি করে তেমন লাভবান হতে পারেননি। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় লিচুর ফলন ভালো হয়েছে সোনারগাঁয়ে।

স্থানীয়রা জানান, লিচু ফল সুস্বাদু বিধায় এক সময় সোনারগাঁয়ে প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড় ও পতিত জমিতে শখের বসে লিচু গাছ লাগাতেন মানুষ। সেই লিচু পাকলে তারা নিজেরা ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠাতেন বাকিগুলো পশুপাখিরা খেতো। এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মৌসুমী ফল লিচু সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল হওয়ার কারণে লিচুর চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।

এছাড়া সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের জেলার অন্য এলাকার তুলনায় আগে বাজারে আসায় ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে সোনারগাঁয়ে লিচুর বাগানের চাষ করা হয়।

সোনারগাঁয়ে তিন জাতের লিচু উৎপাদন হয়। (কদমি) চায়না থ্রি, কদমি ও পাতি লিচু। এক সময় ব্যাপক হারে পাতি লিচুর বাগান ছিল। পাতি লিচুর গাছগুলোও অনেক বড় হতো। আর গাছে চারদিকে ঝুলে থাকতো থোকায় থোকায় লাল রংঙ্গের পাকা লিচু। পাতি লিচুর তুলনায় চায়না থ্রি (কদমি) লিচুর সাইজ একটু বড় ও রসালো বিধায় এখন সোনারগাঁয়ে ব্যাপক হারে কদমি লিচুর বাগান করা হচ্ছে। কদমি লিচু গাছ পাতি লিচুর তুলনায় ছোট হওয়ার কারণে এক বিঘা জমিতে ৫০-৬০টি কদমি লিচু গাছ লাগানো যায়। পরিপক্ক একটি কদমি লিচু বাগান বছরে প্রায় বিঘা ৫ লাখ টাকার উপর অর্থ উপার্জন হয়। সে জন্য আগের চেয়ে দিনে দিনে সোনারগাঁয়ে লিচু বাগানের সংখ্যা ক্রমই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের লিচুর বাগানের মালিক আলমগীর জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সব বাগানেই লিচুর ফলন অনেক হয়েছে। গত বছর যে বাগান এক থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার আশা করা যায় সেই বাগান বিক্রি হবে দুই লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারবো।

তিনি বলেন, ‘প্রচন্ড রোদের কারণে এবার লিচু বেশি ফোলেনি।’ তবে সোনারগাঁয়ের লিচু স্বাদে ভালো হওয়ায় প্রতি বছরই বাজারে এর কদর থাকে।

লিচু বাগানের ক্রেতা আব্দুল জলিল বলেন, এবার অন্যবারের তুলনায় লিচু ফলন ভালো হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টি ও রোদের কারণে লিচু ফোলেনি।

তিনি আরও বলেন, ‘সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারা নিতে আসছেন। এই লিচু আগে আসে বলে দাম কিছুটা বেশি।’

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা আকতার জানান, এবছর লিচুর ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়-তুফান কম হলে লিচুর দাম ভালো পাবেন কৃষকরা। লিচুর আবাদ আরও বাড়ানোর জন্য কৃষি অফিস কাজ করছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে তিন জন উপসহকারী বাগান মালিকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। লিচুর মুকুল আসার পর পরই গাছের গোড়ায় পানি দেয়াসহ বাগানে কীটপতঙ্গ, মাকড়সা দূর করার জন্য বালাইনাশক স্প্রে করা সহ গাছ ও মুকুলের যত্ন নেয়ার বিষয়ে গাছ মালিকদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী, জনবল নিয়ে লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাঠে কাজ করছেন।

তিনি আরও জানান, সোনারগাঁয়ে প্রায় একশ’ একর জমিতে প্রায় দুই শতাধিক বাগানে লিচুর আবাদ হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে সোনারগাঁয়ে লিচু চাষ বাড়াতে লিচু চাষিদের নিয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

—ইউএনবি