সম্মানিত নগর বাসীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শুরু হয়েছে শুকনা মৌসুম। এই মৌসুমেই বায়ু দূষণ শুরু হয় এবং চরম পর্যায়ে পৌঁছে যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে মাচ³ মাস পযর্ন্ত বায়ু দূষণ মৌসুম অব্যাহত থাকে সাধারণত। মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর ঝুঁকি এড়াতে আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা গ্রহণ করতে পারি। এখন আমাদের বুঝতে হবে কেন এবং কি কারণে বায়ূ দূষণ হয়, এর জন্য দায়ী কে বা কারা আর এর প্রতিকারই বা কি? চলুন এই সকল প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর কি আমরা জানি। বাযূ দূষণ রোধে উন্নয়ন সহযোগী বিশ্ব ব্যাংক এর অথ³ায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগ কতৃ³ক সরাসরি বাস্তবায়নাধীন ইম্প্রুভমেন্ট অব আরবান পাবলিক হেলথ প্রিভেন্টিভ সাভিসেস প্রজেক্ট (আইইউপিএইচপিএসপি) ইতোমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি কপো³রেশন, চট্টগ্রাম সিটি কপো³রেশন, সাভার পৌরসভা, ঢাকা ও তারাবো পৌরসভা, রুপগন্জ, নারায়নগন্জ বায়ু দূষণ রোধে বিভিন্ন ধরণের কাযক্রম পরিচালনা করছে।
যে কারণে বায়ু দূষনঃ
বাতাসে ক্ষতিকর গ্যাস ধুলাবালি, ধোঁয়া, রাসায়নিক কনা বা দূর্গন্ধ, মানবসৃষ্ট বর্জ্য হতে নির্গত গন্ধ যা বায়ু দূষণ করে এবং মানুষের স্বাস্থ্য, পরিবেশ, কৃষি ও জলবায়ুর উপর সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। যানবাহনের কালো ধোঁয়া, বর্জ্য পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া, কলকারখানার বর্জ্য, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া, কৃষি জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার এর ব্যবহার। এছাড়া ঝড়, বনাঞ্চল উজাড় এবং শুষ্ক আবহাওয়া বায়ু দূষণের অন্যতম কারন।
বায়ু দূষণের ফলে মানব দেহে সাধারণত যে ক্ষতি হয়ঃ
বায়ু দূষণের ফালে মানুবদেহে যে ক্ষতি হয় এরমধ্যে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, চোখ জ্বালাপোড়া করা, ফুঁসফুসের প্রদাহ, হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি, ফসল উৎপাদন হ্রাস পাওয়া, জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন, জীববৈচিত্রের বংশ বৃদ্ধি হ্রাস পাওয়া অন্যতম।
বায়ৃ দূষণ রোধে আমাদের করনীয়ঃ
আমরা নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপদ পৃথিবী বিনির্মাণে যে কাজগুলি ইচ্ছাপোষণ করলে নিজেরা সহজেই সম্মিলিতভাবে করতে পারিঃ- তাহলো-ফিটনেসবিহীন গাড়ী ব্যবহার না করা, এবং অন্যকে এ ধরনের গাড়ী ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা, বর্জ্য উন্মুক্ত জায়গায় বা বসতি এলাকাতে না পোড়ানো। নির্মাণ কাজে সতর্কতা অবলম্বন করা ও নিরাপত্তাজনিত নেট ব্যবহার ও পানি ছিটিয়ে ধুঁলা কমানো। শুকনা মৌসুমে জনসমাগম ও যেখানে গাড়ী চলে সেখানে নিয়মিত পানি ছিটানো, পরিত্যাক্ত/খোলা জায়গায় বনজ, ফলদ ও ওষধী গাছ রোপন, মাস্ক পরিধান করা। কমিউনিটির সকল মানুষকে সচেতন করা, এজন্য সভা-সমাবেশ পোষ্টার-সিফলেট বিতরণ (উদ্বুদ্ধকরণ মেসেজসহ), ময়লা-আবর্জনা নির্ধারিত জায়গায় ফেলা এবং পোড়ানো অফিস-আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রম চলমান রাখা ইত্যাদি। আমরা এবং কমিউনিটির সকল মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণসহ বাংলাদেশের প্রচলিত যে সকল আইন আছে তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা। আইন প্রয়োগে আমরা যাদের সাহায্য নিতে পারি তাদের মধ্যে পরিবেশবিদ, পরিবহনের সাথে সম্পৃক্ত জনগোষ্ঠি, আইনশৃংখলা বাহিনী, রিহ্যাব বা নির্মাণ কাজের সাথে সম্পৃক্ত সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নির্মাণ শ্রমিক।
মানব স্বাস্থ্য সুরক্ষা, পরিবেশ রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ নগরী তৈরী করতে এখনই আমাদের ব্যক্তি, সমাজ, সরকার সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজে সচেতন হতে হবে, অন্যকে সচেতন করতে হবে, সর্বোপরি মানুষের জীবন যাপনের অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই কেবল বায়ু দূষণ কমানো সম্ভব।
মোঃ এনামুল হক
বিহেভিয়ার চেন্জ কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট

আরও পড়ুন
শেখ হাসিনার দুটি ভল্টে ৮৩২ ভরির যেসব স্বর্ণালঙ্কার ছিল
ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৬১৫
৪৭তম বিসিএস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের