নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল চিনিকল মালিকরা। সরকার পণ্যটির দাম বেঁধে দেয়ার পর থেকেই চিনিকল মালিকরা বাজারে চিনি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। আর সেক্ষেত্রে জ্বালানি সঙ্কটে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাত দেখানো হচ্ছে। অভিযোগ ওঠেছে- বাজার থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিতেই চিনিকল মালিকরা এমন কারসাজি করছে। চিনিকল এবং বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাজারে চিনি মিলছে না। মিল থেকে চিনি সরবরাহ না করায় দোকানে কোনো চিনি নেই। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের মিলাররা চিনির দাম আরো বাড়বে জানিয়েছে। সরকার গত ৬ অক্টোবর প্রতি কেজি চিনিতে ৬ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনির দাম ৯০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। আর দাম বেঁধে দেওয়ার পর থেকেই বাজারে চিনির সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রতি কেজি চিনি ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা জানালেও বাজারে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সরকার চিনির যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কোম্পানিগুলো ওই দরে চিনি বিক্রি করতে আগ্রহী না। মিলাররা আরো বেশি দাম বাড়াবে বলে জানিয়েছে। বর্তমানে বাজারে একবারেই প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই। খোলা চিনির সরবরাহও কম। পাইকারি বাজারে কিছু খোলা চিনি পাওয়া গেলেও খরচসহ সবমিলিয়ে দাম পড়ছে ১০০ টাকা কেজিরও বেশি। তারপর চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। মিলারদের মতে, গ্যাস সঙ্কটের কারণে চিনি পরিশোধন কারখানাগুলো চাহিদামতো চিনি পরিশোধন করতে পারছে না। ফলে চিনির উৎপাদন কমেছে। আর সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিনির যে দর নির্ধারণ করে দিয়েছে তাতে চিনি বিক্রি করলে লোকসান গুণতে হবে।
এদিকে বিদ্যমান অবস্থা প্রসঙ্গে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, গ্যাস সঙ্কটের কারণে চিনির উৎপাদন অনেক কমে গেছে। আগে মিলগুলো ২৪ ঘণ্টাই গ্যাস পেলেও এখন তা চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। চিনি উৎপাদনের ওপর তার প্রভাব পড়েছে।
অন্যদিকে বাজারে হঠাৎ করে চিনির সংকটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কড়া নজর রাখছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের প্রধান আবদুল জব্বার মন্ডল জানান, হঠাৎ করে চিনির সঙ্কটের কারণ খুঁজে বের করতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঠে নেমেছে। মিলগুলোতে গিয়ে সেখানে কত দরে চিনি বিক্রি হচ্ছে, কী পরিমাণ চিনি বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে, কোনো ধরনের সমস্যা আছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হবে। কোনো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চিনির বাজার অস্থিতিশীল করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন
দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার আহ্বান
রমজানে কোনো পণ্যের সংকট থাকবে না: ভোক্তার ডিজি
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খাসি-মুরগি-মাছ