মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এবং মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গাংনী শহরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
সোমবার বিকালে ঢাকায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের ২৩৭ প্রার্থীর মনোনয়ন ঘোষণা করেন। মেহেরপুর-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনকে মনোনীত করা হয়। তবে দলের জেলা কমিটির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন এবং তিনি বঞ্চিত হন।
মনোনয়ন ঘোষণার পরই মিল্টনের সমর্থকরা রাতেই আমজাদ হোসেনকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সকালে সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ ও আরও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন জানান, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দলের বঞ্চিত গ্রুপের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সুলাইমান শেখসহ কয়েকজন বলেন, সোমবার রাত ৮টা থেকে ভাঙচুর, মিছিল ও সংঘর্ষের কারণে শতাধিক দোকান বন্ধ থাকে। মিল্টনের সমর্থকরা রাত থেকেই টায়ার জ্বালিয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন হোটেল ও দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা বিএনপির প্রার্থী আমজাদ হোসেনের নির্বাচনি কার্যালয়েও হামলা চালায়। হামলাকারীরা ইট-পাটকেল ছুড়ে, কার্যালয় ভাঙচুর করে এবং আসবাবপত্র রাস্তায় জড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আমজাদ হোসেন তার সমর্থকদের শান্ত হতে বলেন। উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী সড়কে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, “বিএনপি ১৬ বছরের ত্যাগ বিবেচনায় নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু মনোনয়ন বঞ্চিত গ্রুপের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দলের ভাবমূর্তিকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।
মনোনয়ন বঞ্চিত জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন জানান, কেন্দ্রঘোষিত অবৈধ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত সমর্থকরা মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিএনপি প্রার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, দলের জেলা সভাপতিসহ কিছু সমর্থক ফ্যাসিস্ট দলের কর্মীদের উসকানি দিয়ে হঠকারি আচরণ শুরু করেছেন। আমি কর্মীদের জানিয়েছি, দ্বন্দ্ব হতে পারে, তবে জনদুর্ভোগ তৈরি করে তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, নিজের সমর্থকদের মাঠে নামতে দিতে দিইনি। দু’দিনের মধ্যে বিএনপির সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামবেন।
গাংনী থানার ওসি ইসরাইল হোসেন জানান, “মনোনয়ন না পাওয়া একটি পক্ষ সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মিছিল ও পথসভা করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। পুলিশ জনদুর্ভোগ কমাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
বিএনপিতে যোগ দিলেন মীর মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ
ফুলবাড়িয়ায় বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
মনোনয়ন না পাওয়ায় কুমিল্লায় বিএনপি নেতা ইয়াছিনের সমর্থকদের মশাল মিছিল