নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের একমাত্র সমুদ্র বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারের বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (বোরি) মহাপরিচালক পদে নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা কমডোর মো. মিনারুল হককে নিয়োগ দিয়ে গত ৭ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই খবর প্রকাশ হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাকে নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংস্থাটিতে কর্মরত সকল সমুদ্র বিজ্ঞানী ও কর্মচারিরা।
একইসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিতে শীর্ষ কর্মকর্তা পদে সংশ্লিষ্ট গবেষককে নিয়োগ দেওয়া, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পদোন্নতি ও পেনশন সুবিধা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। দাবি আদায় না হলে কর্মবিরোতির মতো কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারী দিয়েছেন বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (বোরি) বিজ্ঞানী ও কর্মচারীরা।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠার কাছে পাঠানো এক স্মারকলিপিতে এই দাবি তুলে ধরেন তারা। স্মারকলিপিতে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির ৫২ জন বিজ্ঞানী ও কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিজেদের পূর্ণ সমর্থন ছিলো এবং চলমান রাষ্ট্র সংস্কারে নিজেদের একত্মতা রয়েছে জানিয়ে স্মারকলিপিতে তারা লিখেছেন, সম্প্রতি দেশে সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিবর্তন করা হচ্ছে, যা সরকারের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত এরকম জটিল ও নিবিড় সাইন্টিফিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে একজন সামরিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থবির হয়ে পড়বে এবং প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। বিধায় এই প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একত্রিত হয়ে আবেদন জানাচ্ছি যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানে মহাপরিচালক হিসাবে আমরা কোন সামরিক কর্মকর্তা নিয়োগ চাই না। কোন স্বনামধন্য বিজ্ঞানী, গবেষক, একাডেমিশিয়ান বা সিভিল প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা বা যোগ্য অন্য যেকোন ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদানে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন আপত্তি নাই।’
সামরিক কর্মকর্তাকে গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে জোর আপত্তি জানিয়ে স্মারকলিপিতে তারা আরও বলেন, ‘আমরা এই প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ আরও জোর দাবী জানাচ্ছি যে, এই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পর থেকে শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়নি। তাছাড়া, নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও বিদ্যমান অস্থায়ী/শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির পর থেকে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্লক পোস্টে কর্মরত আছে। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন পেনশন সুযোগ নাই। তাছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জব সিকিউরিটি নাই। এ সকল দাবি পূরণের মাধ্যমে একটি স্বাভাবিক ও সহমর্মিতার পরিবেশ তৈরি করে দেশের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ তৈরি করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
দাবিগুলো পূরণ না হলে আন্দোলনসহ কর্মবিরতি পালন করতে আমরা বাধ্য হবেন বলেও স্মারকলিপিতে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আরও পড়ুন
যোগ্য ব্যক্তিকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হবে : রাষ্ট্রপতি
নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
ভারতীয় হাইকমিশনে ড. মনমোহন সিংয়ের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা