জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় ইজারাবিহীন বিভিন্ন ছড়া থেকে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালু খেকো চক্র প্রকাশ্যে ট্রাকযোগে বালু পাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে ছড়ার পাড়ে ভাঙ্গন এবং বালুবাহী ট্রাক-ট্রাক্টর চলাচলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। এতে জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। স্থানীয়দের এসব বালূ পাচারকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ভুমি ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বালু মহাল মামলা সংক্রান্ত কারণে ইজারা হয়নি। আর এসব বালু মহাল থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দিনমজুর নিয়োগ দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চড়া দামে বিক্রি করছে। বালু খেকো চক্র ছড়ার পাড়ে বালু স্থুপ করে রেখে ট্রাক/ট্রাক্টর যোগে চড়া দামে বিক্রি করছে।
সরেজমিনে দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের দেওছড়া ঘুরে ১৫-২০টি বালু উত্তোলনের স্পট থাকতে দেখা গেছে, কিছু দুর পরপর একেকটি স্পটে হাজার/দেড় হাজার ঘনফুট বালু স্থুপ করে রাখা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, এ ছড়া থেকে প্রতিদিন ১৫/২০ ট্রাক/ট্রাক্টর বালু পাচার হচ্ছে। এখানকার ট্রাক্টর মালিক সবুর হাজী, জামাল মিয়া, আব্দুল খালিক, দিনার প্রমুখ অবৈধ বালু উত্তোলনে বিনিয়োগ করেন। সমস্ত দিন দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে তারা শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলন করান। ছড়ার পাড়ে কিছু দুর দুর স্টেক করে রাখেন। সন্ধ্যার পর থেকে ট্রাক্টরযোগে বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন। এরা প্রতি ট্রাক বালু ৪ হাজার এবং প্রতি ট্রাক্টর বালু আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করেন। উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নতুন সায়পুর আশ্রয়ন প্রকল্পের সড়ক সংলগ্ন ছড়া থেকে বালু পাচারের কারণে চলাচল রাস্তা ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। আরো কয়েকটি ছড়া থেকেও ভুমি ও পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসাধুরা অবাধে বিক্রি করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ বালু উত্তোলন স্থল ও পাচারকালে শাহবাজপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মাসুক আহমদ বালুভর্তি ট্রাক আটক করেন। পরে অদৃশ্য কারণে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়েই তিনি ছেড়ে দেন। এতে বালু খেকোরা অনেকটা বেপরোয়া। অবৈধ বালুবাহী যানবাহন চলাচলে অফিস বাজার-সোয়ারারতল ইটসলিং ও কাচা গ্রামীণ রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। ৪-৫ গ্রামের মানুষ এ রাস্তায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন।
এব্যাপারে শাহবাজপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মাসুক আহমদ জানান, তার বিরুদ্ধে এধরণের কোন অভিযোগর নেই। বালু পাচারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান, কিন্তু এর আগেই অসাধুরা পালিয়ে যায়। এছাড়া অবৈধ বালু পাচারের ব্যাপারে তার কাছে ইউএনও কিংবা এসিল্যান্ডের কোন নির্দেশনা না থাকায় তিনি ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, সরকারী বালু মহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কোন তথ্য তার জানা নেই। সঠিক তথ্য পেলে বালু খেকোদের যথাযত আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর রংপুর জোনের অংশীজনের সভা অনুষ্ঠিত
রংপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মহানগর ও জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন
র্যাব রংপুরে ৩৫১.৩৮ গ্রাম হেরোইন সহ স্বামী-স্ত্রী আটক করেছে