বেরোবি প্রতিনিধি
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ১৬ জুলাই শহিদ দিবসে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’সহ রাজনৈতিক স্লোগান লেখার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি। এতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই ওই ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হলেও ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি কমিটি।
এর আগে ১৫ জুলাই গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, যাত্রী ছাউনি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাল ও কালো রঙে ‘জয় বাংলা’, ‘শেখ হাসিনা ফিরবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান লেখা হয়।
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এসব ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরও সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে৷
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, শাস্তি না পাওয়া অনেক ছাত্রলীগ কর্মী এখনো ক্যাম্পাসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবং আবাসিক সুবিধা ভোগ করছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
ছাত্রদলের সভাপতি মো. ইয়ামিন বলেন, ছাত্রদল সবসময় ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখে আসছে। ৫ আগস্টের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দোসররা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা বারবার প্রশাসনকে অবগত করলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ পুরো ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি সুমন সরকার বলেন, এই ঘটনার দায় প্রশাসনের। ক্যাম্পাসে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে, তাই নিরাপত্তা জোরদার করা প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল। আমরা দাবি জানাই, ক্যাম্পাসে পুলিশ ও আনসারের সংখ্যা বাড়ানো হোক। ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। অনেকেই এখনো ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। প্রশাসনের উচিত ছিল দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. ইলিয়াছ প্রামানিক বলেন, আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করেছি। সেখানে দূর থেকে একজন ব্যক্তিকে দেখা গেলেও তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। আমরা পরবর্তী সিন্ডিকেট সভার আগেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।

আরও পড়ুন
রাবিতে আওয়ামীপন্থি ডিনদের অফিসে তালা, শিক্ষার্থীদের ‘জিরো টলারেন্স’ কর্মসূচি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কর্মীরা
যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: বেরোবি প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান