বেরোবি প্রতিনিধি
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রায় ১ মাস ধরে হলে আসেন না শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট ড. মো. কামরুজ্জামান। শিক্ষার্থীদের দাবি হয় তিনি হলে আসবেন না হয় নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দিতে হবে।
এদিকে প্রভোস্ট শূন্য হলে নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। হলের খাবারের নিম্নমান, পানির ফিল্টার নষ্ট,ওয়াইফাই কাজ না করা সহ একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। এগুলো সমাধানে প্রভোস্টের কোনো উদ্যোগ নেই।
রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিশেষ খাবারের অব্যবস্থাপনার দায়ে ৭ আগস্ট বিকেলে পদত্যাগপত্র জমা দেন হল প্রভোস্ট কামরুজ্জামান। এরপর থেকে আর তিনি হলে আসেন না।
এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট ড. কামরুজ্জামান বলেন, আমি হলের দায়িত্ব নেই। আমি হলে আর যাই না। কোনো কাগজে সাক্ষর করি না। আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। প্রশাসন তা এখনো গ্রহণ করেনি।
এদিকে হল প্রভোস্টের এমন নাটকীয়তায় ক্ষিপ্ত আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা।
হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হল প্রভোস্ট ছাড়া হল কীভাবে চলে। এক মাস হতে চলল হলে প্রভোস্ট নেই। কোনো সমস্যা সমাধান হচ্ছে না।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাকিব বলেন, আমাদের ৬ তলায় ফিল্টার নষ্ট। যেদিন ফিল্টার দেয় সেদিন থেকেই নষ্ট। আমি নিজে অনেকবার গেছি। এছাড়া আমাদের ফ্লোরের অনেকেই গেছে অভিযোগ দিছে তারপরও সমাধান নাই। আমরা ট্যাবের পানি খাচ্ছি।
আরেক শিক্ষার্থী মমিন বলেন, হয় হল প্রভোস্ট কাজে ফিরুক না হয় নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হোক। এমন নাটক আর মেয়ে নেওয়া যায় না। হলের ওয়াইফাইও কাজ করে না। শত অভিযোগ দিলেও কাজ হয় না। অভিভাবক শূন্য হল কীভাবে চলবে।
হলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আবাসিক শিক্ষার্থী মাইদুল ইসলাম বলেন, হলের ডাইনিং এ প্রতি বেলায় ২০০-৩০০ জনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। খাবারের মান যেমন অস্বাস্থ্যকর তেমনি অনিরাপদ। এখানে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা আসলে বিশুদ্ধ পানি নয়। পানির জন্য ক্ষতিকর কিছু ধাতব পদার্থ হলো পারদ, সিসা, ক্যাডমিয়াম এবং আর্সেনিক। এই ক্ষতি কারক উপাদানগুলো পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে এবং যা আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। আমাদের ডাইনিং এ খেতে গিয়ে এরকম অনিরাপদ ও দূষিত পানি পান করতে হচ্ছে বাধ্য হয়েই। এই দূষিত পানি মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুস্থতা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টা বিবেচনায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শুধুমাত্র নামমাত্র ফিল্টারের ব্যবস্থা না করে বড় মাপের কার্যকর পানির ফিল্টার প্রতিস্থাপন করতে হবে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ পানি পান করতে পারে। সেই সাথে ডাইনিং এর খাবারের মান উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অতিদ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বেরোবি শাখা ছাত্রদল আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চরম আবাসন সংকট। দুইটি ছেলেদের হল ও মেয়েদের একটি হল। তারপরও আবার অব্যবস্থাপনা ও অপরিষ্কার হল। খাবারের মান নিম্নমানের।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি হল প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন। ১ মাস থেকে হলে প্রভোস্ট যান না। তাহলে এখানে কেন নতুন প্রভোস্ট দেওয়া হচ্ছে না। প্রভোস্ট ছাড়া তো হল চালানো যায় না। প্রশাসনকে দ্রুত হলের বিষয়গুলো সমাধানের আহ্বান জানাই।
এ ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ বলেন, পারিবারিক কারণে হল প্রভোস্ট ছুটিতে ছিলেন। সোমবার (২৫ আগস্ট) রংপুরে এসেছেন। হলে অন্যান্য সহকারী প্রভোস্টরা হলে যাচ্ছেন। কাজ করছেন।
আরও পড়ুন
জয়পুরহাটে শ্রেণীকক্ষে দেরিতে আসার কথা বলায় ৩৩ শিক্ষার্থীকে পিটালেন শিক্ষক : অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ
হিটের প্রকল্প মূল্যায়নে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে: ইউজিসি
বেরোবিতে ‘একাডেমিক নিয়ম-রীতি ও র্যাগিং প্রতিরোধ’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত