অনলাইন ডেস্ক :
দিনের খেলা শুরুর আগে টিভিতে কথোপকথনে জেমস অ্যান্ডারসন বললেন, “উইকেটে এদিন মুভমেন্ট কম থাকবে। (স্পিনার) জ্যাক লিচকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে।” দিনের প্রথম উইকেট এনে দিলেন সেই লিচই। তবে সহায়তা না থাকা উইকেটেই পরে জ¦লে উঠলেন অ্যান্ডারসন নিজে। আগের দিন স্টুয়ার্ট ব্রড ছারখার করে দিয়েছিলেন নিউ জিল্যান্ডের টপ অর্ডার। এবার আগুনে বোলিংয়ে অ্যান্ডারসন পুড়িয়ে দিলেন কিউই লেজ। মাইলফলকের টেস্ট দুর্দান্ত বোলিংয়ে রাঙালেন ব্রড ও অ্যান্ডারসন। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে নিউ জিল্যান্ডকে ২৬৭ রানে উড়িয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। ১৫ বছর পর নিউ জিল্যান্ডে টেস্ট জয়ের মুখ দেখল ইংল্যান্ড। সবশেষ ২০০৮ সালের মার্চে নেপিয়ারে জয় পেয়েছিল মাইকেল ভনের ইংল্যান্ড। সেই টেস্টেও ছিলেন ব্রড-অ্যান্ডারসন। এই ১৫ বছরে অবশ্য নিউ জিল্যান্ডে ¯্রফে ৭টি টেস্টই খেলেছে ইংলিশরা। এর দুটিতে তারা হেরেছিল, বাকিগুলো হয়েছিল ড্র। এই টেস্টের ভাগ্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় আগের দিনই। শেষ ইনিংসে ৩৯৪ রানের লক্ষ্যে ছুটে নিউ জিল্যান্ড দিন শেষ করে ৫ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে। রোববার চতুর্থ দিনে কিউইরা টিকতে পারেনি এক সেশনও। গুটিয়ে যায় তারা ¯্রফে ১২৬ রানে। নিউ জিল্যান্ডের প্রথম ৫ ব্যাটসম্যানের ৪ জনকেই বোল্ড করেছিলেন ব্রড। এবার অ্যান্ডারসন শিকার করেন শেষ ৪ উইকেট। এই টেস্টেই ম্যাকগ্রা-ওয়ার্ন জুটিকে ছাড়িয়ে টেস্ট ইতিহাসের সফলতম বোলিং জুটির রেকর্ড গড়েন ব্রড-অ্যান্ডাসন। দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তানকে হারানোর পর ইংল্যান্ডের এটি টানা ষষ্ঠ টেস্ট জয়। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকস জমানায় ১১ টেস্টে দশম জয় এটি। তুমুল আলোচিত ‘বাজবল’ ছুটছে একরকম অপ্রতিরোধ্য গতিতে। চতুর্থ দিনে যে কিউইরা খুব একটা লড়াই করতে পারবে না, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় দিনের শুরুতেই। দিনের তৃতীয় ওভারেই আউট হন মাইকেল ব্রেসওয়েল। জ্যাক লিচের বল এই অলরাউন্ডার তুলে দেন শর্ট মিড উইকেটে। ২৫ রান নিয়ে দিন শুরু করে কোনো রান তিনি যোগ করতে পারেননি। পরের ওভারে পরপর দুই বলে অ্যান্ডারসন ফিরিয়ে দেন স্কট কুগেলাইন ও কিউই অধিনায়ক টিম সাউদিকে। একটু পরে বিদায় করে দেন তিনি নিল ওয়্যাগনারকেও। এরপর শেষের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষা কিছুটা দীর্ঘায়িত করেন ড্যারিল মিচেল। দ্রুত কিছু রান তুলে ফিফটিতে পৌঁছে যান তিনি। ১৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে যা তার ষষ্ঠ ফিফটি, সঙ্গে সেঞ্চুরি আছে আরও চারটি। মিচেলকে এক প্রান্তে রেখেই আরেকপ্রান্তে ছোবল দেন অ্যান্ডারসন। ব্লেয়ার টিকনারকে বোল্ড করে শেষ করে দেন ম্যাচ। ম্যাচে অ্যান্ডারসনের শিকার ৭টি। ১৭৮ টেস্ট খেলে তার মোট উইকেট এখন ৬৮২টি। ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে ১৬০ টেস্টে ব্রডের শিকার এখন ৫৭১। তবে দুই পেস গ্রেটকে ছাপিয়ে দুই ইনিংসে ৮৯ ও ৫৪ রানের আগ্রাসী দুটি ইনিংসে ম্যাচের সেরা হ্যারি ব্রুক। ৫ টেস্ট খেলে ২৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের গড় ৭৭.৮৭, স্ট্রাইক রেট ৯৬.৮৮! সিরিজের শেষ টেস্ট ওয়েলিংটনে শুরু হবে আগামী শুক্রবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩২৫/৯ (ডি.)
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০৬
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৩৭৪
নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৯৪, আগের দিন ৬৩/৫) ৪৫.৩ ওভারে ১২৬ (মিচেল ৫৭*, ব্রেসওয়েল ২৫, কুগেলাইন ২, সাউদি ০, ওয়্যাগনার ৯, টিকনার ৮; অ্যান্ডারসন ১০.৩-৩-১৮-৪, ব্রড ১৫-৫-৪৯-৪, রবিনসন ৮-০-৩৪-১, লিচ ১১-৪-২৫-১, রুট ১-১-০-০)
ফল: ইংল্যান্ড ২৬৭ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: হ্যারি ব্রুক
আরও পড়ুন
তামিমের অর্ধশতকে দেড়শ’র আগেই থামল ঢাকা
সুপার ওভারে ইংল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশের মেয়েরা
ভক্তদের বড় সুখবর দিলেন বার্সেলোনা সভাপতি