September 20, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, September 20th, 2025, 5:42 pm

ভাঙন ঝুঁকিতে সংযোগ সড়কসহ কয়েকটি গ্রাম

রংপুর ব্যুরো:

দুই দফতরের রশি টানাটানি, হুমকিতে তিস্তা সেতু সংযোগ সড়কসহ কয়েকটি গ্রাম। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে বাঁধটি এলজিইডির, তারাই সংস্কার করবে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বাঁধটি পরিদর্শন করলেও নেয়নি কোনো পদক্ষেপ। দুই দফতরের রশি টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত বাঁধটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারণে পানির তোড়ে প্রায় ৮০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় তিস্তা সেতুসহ রংপুর-লালমনিরহাট সড়ক ও কয়েকটি চর হুমকির মুখে পড়েছে। আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন নদীরপারের মানুষজন।

৯০০ মিটার বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার জায়গার ব্লক ধসে গিয়ে স্থানটিতে প্রায় ৭০ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।রংপুর তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধে ধস, ভাঙন ঝুঁকিতে সড়করংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর পশ্চিম পাশের সেতু রক্ষা বাঁধটিতে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে লালমনিরহাট-রংপুর অঞ্চলের যোগাযোগ সড়ক, মহিপুর সেতুসহ ওই এলাকার প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার।

তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র স্রোতে বাঁধের ব্লকের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। এতে ৯০০ মিটার বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার জায়গার ব্লক ধসে গিয়ে স্থানটিতে প্রায় ৭০ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের রহমত আলী বলেন, “গত দুই বারের বন্যায় বাঁধের ক্ষতি হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো সংস্কার কাজ করেনি। তাই এবারের বর্ষায় পানি বাড়তেই একের পর এক সিসি ব্লক তলিয়ে যাচ্ছে। নিচে গভীর গর্ত তৈরি হয়ে ভাঙন আরও ভয়াবহ হচ্ছে।”বাধের পাড়ের কৃষক আফতাবুল ইনলাম বলেন, “এই বাঁধ যদি দ্রুত ঠিক মেরামত করা দরকার। না হলে সেতু ভেঙে যেতে পারে। সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমাদের গ্রামে স্থায়ী জলাবদ্ধতা হবে, জমি বালুচরে ঢেকে যাবে, চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে।”

২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়া দ্বিতীয় সংযোগ তিস্তা সেতুটি ৮৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯.৬ মিটার প্রস্থের। এতে এতে ১৬টি পিলার ও ১৫টি স্প্যান রয়েছে। সেতুটি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর এলাকার সঙ্গে গঙ্গাচড়া লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের মহিপুরকে সড়কপথে যুক্ত করেছে।লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, “উজানের ঢলে বাঁধের উল্টো দিকে চর পড়ায় নদীর পানি সরাসরি বাঁধে আঘাত হানছে। এতে সড়ক ও জনবসতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দ্রুত জরুরি ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।”স্থানীয় বাসিন্দা ও রংপুর কলেজের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম বলেন, “আমরা নদী পাড়ের বাসিন্দারা সবাই গরিব মানুষ। বাঁধ রক্ষা ছাড়া আমাদের সামনে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বসতভিটা ও সেতু রক্ষা করতে হলে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।”

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, “মহিপুরে তিস্তা সেতুর পশ্চিম অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, বাঁধটি সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় এটির রক্ষণাবেক্ষণ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাতে নেই। যে কারণে তারা এটির সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি তারা।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ওবায়দুল রহমান বলেন, “রংপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তিন মাস আগে সাইট পরিদর্শন করেছেন। তার পরের পদক্ষেপ জানার জন্য আমরা পুনরায় কথা বলব।”

এদিকে এলজিইডি রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা বলেন, “আমরা খবর নিয়েছি সকাল থেকে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে সেতু রক্ষা বাঁধটিতে। আমাদের একটি টিম কাজ করছে। তবে পানি বেশি থাকায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। আশা করছি পানি কমে গেলে দ্রুত বাঁধটি মেরামত করা যাবে।