ভাঙ্গুড়া (পাবনা) সংবাদদাতা : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় স্থানীয় কাউন্সিল আদালতগুলো অচল হয়ে পড়ায় নন-ফৌজদারি অপরাধ বাড়ছে। ফলে যে অভিযোগ আগে এজলাসে বিচারের মাধ্যমে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সহজেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে ক্ষতিগ্রস্তদের পুলিশের কাছে দৌড়াতে হচ্ছে, অপরদিকে প্রতিপক্ষের ওপর মিথ্যা মামলা চাপিয়ে হয়রানির প্রবণতাও বেড়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়,শিশু ও নারী সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ,প্রথাগত জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও অন্যান্য হালকা দেওয়ানি মামলা, ঋণ সংক্রান্ত ও পশু দ্বারা ফসলের ক্ষতি, চুরি,মারামারি অর্থাৎ ক্ষুদ্র নন-ফৌজদারি অপরাধের বিচার আগের মত ইউনিয়ন পরিষদে হচ্ছে না। কারণ হিসাবে জানাযায়,দেশে গণঅভ্যুত্থানের পর ইউপি চেয়ারম্যানরা নানামুখি চাপের কারণে গ্রাম আদালতের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এছাড়া আওয়ামী সরকারের সময় বিতর্কিত নির্বাচনে তারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তাদের প্রতি ইউনিয়নবাসীদের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে।
ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জুবাইদা আরিফিন মানজিলা জানান,ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর গ্রাম আদালতের এজলাস খুব একটা বসে না। অভিযোগকারির আবেদনপত্র দাখিলের সময় ফৌজদারি মামলা হলে ১০টাকা এবং দেওয়ানি মামলা হলে ২০টাকা ফিস জমা নেওয়া হয়। পরে এজলাস বসিয়ে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলার রায় দেওয়া হয়। এখন ফিস না নিয়ে সালিশের মাধ্যমে বেশির ভাগ বিবাদ মীমাংশার চেষ্টা করা হয়।
খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন খান বলেন,দীর্ঘদিন ধরেই গ্রাম আদালতের কার্যক্রম করা যাচ্ছেনা। এছাড়া ‘ইকো সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি এনজিও একজন ভিলেজ কোর্ট অ্যসিস্টেন্ট প্রভাইড করেছিল তাকেও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান থাকলে পারিবারিক সমস্যা সেখানেই মিটে যায়। ইদানিং অবশ্য থানায় নন-ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ বেশি আসায় জিডির পরিমাণ বেড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, স্থানীয় কাউন্সিল আদালতগুলো অধস্তন আদালত হিসাবে বিদ্যমান রয়েছে এবং এখানে আসল ঘটনার সত্যতা যাচাই করে শান্তিপূর্ণ সমাধান করাও সম্ভব। এজন্য গ্রাম আদালত গতিশীল করতে সম্প্রতি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন,গ্রাম আদালত সংশোধন ২০২৪ আইনে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে তিনি প্র¯‘ত রয়েছেন বলে জানান।।
আরও পড়ুন
মধ্য রাতে সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ এর বাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতার হামলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে আতঙ্ক
আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়িতে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ
ভাঙ্গুড়ায় নকল দুধ তৈরির কারখানায় অভিযান ও সীলগালা, অনুমতি ছাড়াই আবার চালুর অভিযোগ!