November 17, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, November 16th, 2025, 7:41 pm

মওলানা ভাসানীর ৪৯তম ওফাতবার্ষিকী

টাঙ্গাইল:

আফ্রো–এশিয়া–লাতিন আমেরিকার নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত, মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম ওফাতবার্ষিকী সোমবার (১৭ নভেম্বর)। ১৯৭৬ সালের এ দিনে তিনি ঢাকার পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র টাঙ্গাইলের সন্তোষে দাফন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সন্তোষে মাজার প্রাঙ্গণসহ টাঙ্গাইল জুড়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

সকাল থেকে মাজারে ভক্ত, মুরিদ, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভাসানী ফাউন্ডেশন, খোদা-ই-খেদমতগারসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ওরশ, মিলাদ, স্মরণসভা, দেয়ালপত্রিকা প্রকাশ ও গণভোজসহ সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি চলছে। ইতোমধ্যে মাজার এলাকায় সাত দিনের ‘ভাসানী মেলা’ শুরু হয়েছে, যার উদ্বোধন করেন ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ।

এ ছাড়া রোববার বিকেলে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা শাখা ‘গণঅভ্যুত্থান-২৪ পরবর্তীতে বর্তমানেও বাংলাদেশে মওলানা ভাসানীর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সভাপতিত্ব করবেন জেলা শাখার সভাপতি সাইফুর রহমান রেজা এবং সঞ্চালনা করবেন আওয়াল মাহমুদ। সভায় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রগতিশীল সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখবেন।

১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের সয়া-ধানগড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া ভাসানীর শৈশব ছিল দারিদ্র্য ও সংগ্রামে ভরা। পিতামাতা ও দুই ভাইকে অল্প বয়সেই হারিয়ে তিনি নানা বাড়ি ও আত্মীয়দের আশ্রয়ে বড় হন। ছোটবেলায় পরনের ছেঁড়া কাপড়ের কারণে তাকে ‘চেগা মিয়া’ নামে ডাকত গ্রামের মানুষ। মক্তবশিক্ষা শেষে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে দেওবন্দে ইসলামি শিক্ষালাভ করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি স্বরাজ্য পার্টি, কৃষক-প্রজা আন্দোলন, মুসলিম লীগ ও যুক্তফ্রন্ট—প্রতিটি পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

১৯৫৭ সালের ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে তার ‘ওয়াআলাইকুম আসসালাম’ ঘোষণা এবং ‘খামোশ’ হুঙ্কার তাকে গণমানুষের প্রতীকে পরিণত করে। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। আজীবন তিনি গরিব, অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছেন এবং প্রগতিশীল, শোষণমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখেছেন।

মওলানা ভাসানীর ওফাতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে তার স্মরণে দোয়া, আলোচনাসভা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মসূচি চলবে সপ্তাহজুড়ে।